×

পুরনো খবর

আ.লীগ ৮ বিএনপি ৩ জাপা ২ জামায়াত ও ইশার একক প্রার্থী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০১৮, ১১:১১ এএম

আ.লীগ ৮ বিএনপি ৩ জাপা ২ জামায়াত ও ইশার একক প্রার্থী
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। দলীয় টিকেট পেতে বড় রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। সেই সঙ্গে লবিং চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে। এ নির্বাচনে অংশ নিতে প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান সফল করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। নিজেদের সমর্থক ও কর্মীদের মাধ্যমে তারা প্রার্থী হওয়ার কথা জানান দিচ্ছেন। আগামী নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের ৮, বিএনপির ৩ ও জাতীয় পার্টির ২ এবং জামায়াতে ইসলামী, জনতা পার্টি ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের একক সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে নেমেছেন। জেলার পাইকগাছা উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং কয়রা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত খুলনা-৬ আসন। এ আসনে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৩৫ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৮৯ হাজার ৩৬৬ ও মহিলা ১ লাখ ৮৫ হাজার ৬৬৯ জন। আগামী নির্বাচনে এ আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ১৬ জন সম্ভাব্য প্রার্থী হয়ে মাঠে নেমেছেন। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ও দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. মসিউর রহমান, আওয়ামী লীগ জাতীয় কমিটির সদস্য ও বর্তমান এমপি আলহাজ এডভোকেট শেখ মো. নূরুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবেক এমপি এডভোকেট সোহরাব আলী সানা, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আকতারুজ্জামান বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও বিএমএর দপ্তর সম্পাদক ডা. শেখ মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপকমিটির সহসম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার প্রেম কুমার মÐল, পাইকগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক গাজী মোহাম্মদ আলী ও উপজেলা সদস্য সচিব মো. রশীদুজ্জামান মোড়ল। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন দলটিরআ.লীগ ৮ বিএনপি ৩ জাপা ২ জামায়াত ও ইশার একক প্রার্থীআ.লীগ ৮ বিএনপি ৩ জাপা ২ জামায়াত ও ইশার একক প্রার্থী কয়রা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. মনিরুজ্জামান মন্টু। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু, জেলা কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি ও পাইকগাছা উপজেলা কমিটির আহবায়ক সাপ্তাহিক সুন্দরবন বার্তার সম্পাদক মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর খুলনা মহানগরের আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাও. আবুল কালাম আজাদ, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মাও. গাজী নূর আহমেদ ও বংলাদেশ জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জি এম কেরামত আলী। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আওয়ামী লীগের এডভোকেট স ম বাবর আলী এ আসনে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে বিএনপির এডভোকেট শেখ রাজ্জাক আলী, আশির দশকে জাতীয় পার্টি থেকে এডভোকেট মোমিন উদ্দীন আহমেদ ও সরদার জহুরুল হক, ১৯৯১ সালে জামায়াত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রæয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে বিএনপি থেকে বিনা ভোটে এড. শেখ রাজ্জাক আলী নির্বাচিত হন। একই সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এড. শেখ মো. নূরুল হক, ২০০১ সালে ৪ দলীয় জোট প্রার্থী জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস এ আসনে নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে নির্বাচিত হন আ. লীগের এড. সোহরাব আলী সানা এবং ২০১৪ সালে সর্বশেষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এড. শেখ মো. নূরুল হক এমপি নির্বাচিত হন। খুলনা-৬ আসনে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের প্রায় এক ডজন প্রার্থী প্রচার-প্রচারণায় নেমেছিলেন। হঠাৎ করে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণায় নেমে পড়ায় এখন প্রার্থীর সংখ্যা কয়েক জন কমেছে। অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশী ইতোমধ্যে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। এখন আর আগের মতো এলাকায় তাদের পদচারণা দেখা যায় না। তবে আওয়ামী লীগের টিকেটে পাইকগাছা-কয়রা এলাকার কাউকে প্রার্থী মনোনীত করতে চান স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এ ক্ষেত্রে এলাকায় আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য ও বর্তমান এমপি আলহাজ এডভোকেট শেখ মো. নূরুল হকের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মননোয়ন দিলে আগামী সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৬ আসন থেকে অংশ নেব। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পাইকগাছা-কয়রার বিভিন্ন এলাকায় দলীয় কর্মকাণ্ড অংশ নিয়েছি। স্থানীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে দলকে চাঙ্গা করেছি। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এলাবাসীর নানা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত না পেলে এ আসন থেকে নির্বাচন করবেন না বলেও জানান ড. মসিউর রহমান। আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য ও বর্তমান এমপি শেখ মো. নূরুল হক বলেন, দলীয় প্রধান চাইলে আমি নির্বাচন করব। সারাজীবন কয়রা-পাইকগাছার জনগণের জন্য কাজ করেছি। এই এলাকার মানুষ ভালোবেসে আমাকে দুবার এমপি নির্বাচিত করেছেন। তিনি আরো বলেন, দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকার উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করেছি এবং বর্তমানেও কাজ করে যাচ্ছি। আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক এমপি এড. সোহরাব আলী সানা বলেন, ছাত্রজীবন থেকে এখনো আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছি। দুবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছি। এর মধ্যে ২০০৮ সালে পাইকগাছা-কয়রা আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছি। সে কারণে আগামী সংসদ নির্বাচনে আবারো দলের কাছে মনোনয়ন চাইব। দল থেকে যদি তাকে মনোনয়ন না দেয়া হয় তাহলে যিনিই মনোনয়ন পাবেন তার পক্ষে কাজ করবেন বলেও জানান সোহরাব আলী সানা। এদিকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে দলটির পাইকগাছা উপজেলা কমিটির আহবায়ক ডা. মো. আব্দুল মজিদ, কয়রার সভাপতি এড. মোমরেজুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. মনিরুজ্জামান মন্টুর নাম শোনা গেলেও মাঠে তেমন কোনো পদচারণা নেই কারো। শুধু পাইকগাছা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ডা. মো. আব্দুল মজিদ মাঝেমধ্যে বিভিন্ন দলীয় কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। ডা. আ. মজিদ বলেন, আগামী নির্বাচনে এ আসন থেকে তিনি নির্বাচন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সাংগঠনিক কার্যক্রম বৃদ্ধির পাশাপাশি এই দুর্দিনে নেতাকর্মীদের পাশে থেকে সব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি। জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস ২০০১ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি অসুস্থ থাকায় এবার শক্ত প্রার্থী খুলনা মহানগরের আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাও. আবুল কালাম আজাদ। মামলা থাকায় দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকলেও এখন তিনি প্রায়ই হাজির হন নির্বাচনী এলাকায়। বিভিন্ন ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রেখেছেন তিনি। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধুকে এ আসনে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি দলীয় সিদ্ধান্তে এক নম্বরে রয়েছেন। তবে দলটির খুলনা জেলা কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি ও পাইকগাছা উপজেলা কমিটির আহবায়ক সাপ্তাহিক সুন্দরবন বার্তার সম্পাদক মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি রাজনৈতিক সংগঠনের পাশাপাশি পাইকগাছা নাগরিক কমিটির সভাপতি হিসেবে জনগণের দাবি আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App