×

পুরনো খবর

আ.লীগ ও বিএনপি উভয় দলেই একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০১৮, ০৪:১৩ পিএম

আ.লীগ ও বিএনপি উভয় দলেই একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজধানী ঢাকার নিকটতম জেলা গাজীপুরের সংসদীয় আসনে প্রার্থিতা নিয়ে শুরু হয়েছে হিসাব-নিকাশ। চলছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নানামুখী তৎপরতা। অনুসারী ও কর্মী-সমর্থকরা তাদের নেতাদের এমপি হিসেবে দেখতে চেয়ে ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জারে সরব রয়েছেন। এ ছাড়া পোস্টার ও ব্যানারের মাধ্যমে কোনো কোনো সম্ভাব্য প্রার্থী এলাকাবাসীর ভোট ও সমর্থন চাইছেন। পুরনোদের পাশাপাশি চলছে নবীনদের নানা প্রচারণাও। তবে কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরসভা এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১-১৮নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত গাজীপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলেই রয়েছেন একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী। গাজীপুর জেলায় মোট পাঁচটি সংসদীয় আসন রয়েছে। আর গাজীপুরকে বলা হয়ে থাকে দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ। নির্বাচনকে ঘিরে এ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে কেউ কেউ পোস্টার, ব্যানার সাঁটিয়ে নিজেকে প্রার্থী হিসেবে জানান দিতে শুরু করেছেন। তৃণমূল নেতাদের সমর্থন আদায়ে প্রার্থীরা নানা তৎপরতা শুরু করেছেন। মনোনয়ন পেতে এলাকায় দৌড়ঝাঁপের পাশাপাশি এসব প্রার্থী দলের হাইকমান্ডের সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করছেন। এ আসনে মনোনয়ন যুদ্ধে নতুন মুখের সংখ্যাই বেশি দেখা যাচ্ছে। প্রধান দুই দলেই মনোনয়ন যুদ্ধে লড়বেন একাধিক নেতা। জেলার ৫টি আসনেই বিএনপি ও আওয়ামী লীগÑ দুদলেরই প্রার্থী বাছাইয়ে চমক থাকতে পারে। তাই নানা হিসাব-নিকাশ করে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের পথ চলছেন। জেলার পাঁচটি আসনের সবকটিতেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জয়ের স্বপ্ন দেখছে। তবে বিএনপি হারানো আসনগুলো পুনরুদ্ধারের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা। নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় বসে নেই জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীও। কার্যত সবকটি আসনেই ভোটযুদ্ধ হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে। আওয়ামী লীগ তথা ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি এবারো প্রার্থী হতে চাচ্ছেন। নবম সংসদে এ আসন থেকে তিনি প্রথম এমপি নির্বাচিত হন বিএনপির প্রভাবশালী প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীকে পরাজিত করে। তবে নিয়মিত এলাকায় না আসার কারণে বর্তমানে তিনি প্রায় জনবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, গেল পাঁচ বছরে গাজীপুর-১ আসনে তেমন উন্নয়ন হয়নি। এ ছাড়া প্রয়োজনের সময় কখনোই তারা মন্ত্রীকে পাশে পাননি বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার ব্যস্ততা ও এলাকায় না আসার সুযোগকে কাজে লাগাতে চাচ্ছেন অনেক নতুন প্রার্থী। এ কারণে আওয়ামী লীগ থেকে এবার নতুন মুখ মনোনয়ন চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে। মনোনায়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে অন্যতম হলেন বিশিষ্ট তরুণ ব্যবসায়ী নূরে আলম সিদ্দিকী। সব সময় গাজীপুরের জনগণের পাশে থাকার জন্য এরই মধ্যে সুপরিচিতি পেয়েছেন তিনি। বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজে সম্পৃক্ত থেকে এলাকাবাসীর নজর কেড়েছেন। দেশের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক ও দাতব্য সংগঠনের কার্যনির্বাহী পদেও রয়েছেন নূরে আলম সিদ্দিকী। আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন লাভের আশায় এরই মধ্যে এলাকায় পোস্টার ছেপে এবং মোবাইলে বিশিষ্টজনদের ঈদ শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন তিনি। দলের হাইকমান্ডের সঙ্গেও তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলে শোনা যাচ্ছে। এ ছাড়া এ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও সুপ্রিম কোট বার এসোসিয়েশসনের সাবেক নেতা এডভোকেট শফিকুল ইসলাম বাবুল মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। তবে নৌকা প্রতীকে প্রার্থী মনোনয়নে এগিয়ে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী প্রবীণ নেতা আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি। অন্যদিকে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে চাচ্ছেন। এ ছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও কালিয়াকৈর পৌরসভার মেয়র মো. মুজিবুর রহমান, মো. হুমায়ুন কবির খান এবং সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন হেলাল নির্বাচনে প্রার্থী হবেন বলে তাদের সমর্থকরা জানিয়েছেন। এ আসন থেকে ১৯৭৯ সালে বিএনপির প্রার্থী হয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন চৌধুরী তানভীর আহম্মেদ সিদ্দিকী। পরবর্তী প্রতিটি নির্বাচনেই তিনি বিএনপির প্রার্থী হতেন। সর্বশেষ তিনি ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনেও বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের কাছে বিপুল ভোটে ধরাশায়ী হন। এর আগে এ আসনটি কালিয়াকৈর ও শ্রীপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিল। সে সময় তার প্রতিদ্ব›দ্বী ছিলেন প্রবীণ নেতা সাবেক প্রতিমন্ত্রী বর্তমান গাজীপুর-৩ আসনের এমপি এডভোকেট রহমত আলী। দল ও দলীয় হাইকমান্ডের বিরুদ্ধে মন্তব্য করাকে কেন্দ্র করে পরবর্তী সময়ে তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। আসন্ন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে একাধিক নেতার মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। তবে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সবাই নতুন। তারা এবারই জাতীয় সংসদের নির্বাচনে প্রথম মনোনয়ন প্রত্যাশী। অপরদিকে জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার আবদুস ছালাম প্রার্থী হবেন বলে তার সমর্থকরা জানান। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীও প্রার্থী দেবে বলে জানা গেছে। তবে তারা এখনো প্রার্থী চ‚ড়ান্ত করেনি। তারা নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিবেশ-পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App