×

জাতীয়

বাইশারীতে খালের পাড় ভেঙে রাস্তা ও বসতবাড়ি বিলীন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০১৮, ০২:৪৪ পিএম

বাইশারীতে খালের পাড় ভেঙে রাস্তা ও বসতবাড়ি বিলীন
পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের রাজঘাট এলাকায় রাবারড্যাম প্রকল্পের কাজের নামে খালের দুই পাড় কেটে ঠিকাদার উধাও হয়ে গেছেন। বর্তমানে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় পাহাড়ি ঢলে বন্যার পানিতে খালের দুই পাড়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে শতাধিক বাড়িঘরসহ চলাচলের রাস্তা এখন বিলীন হওয়ার পথে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কাপোরেশন বিভাগ (বিএডিসি) এ রাবারড্যাম প্রকল্পের কাজ শুরু করে গত ছয় মাস আগে। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার কারণে বর্তমানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ করে এখন লাপাত্তা। যার ফলে ফারিখালের দুই পাশে বসবাসরত মানুষ এখন ঝুঁকি নিয়ে জীবনযাপন করছেন বলে জানান স্থানীয় এই গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য মো. শফি। তিনি আরো জানান, আমাদের বসতভিটা, মসজিদ, মাদ্রাসা, রাস্তাঘাট সব কিছু বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে শত বছরের রাস্তা বিলীন হয়ে যাওয়ায় জনসাধারণের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। খালের দুই পাড় কাটার পর বর্তমান বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের তীব্র ভাঙনে আমাদের বাপ-দাদার আমলের বসতভিটা, রাস্তাঘাটের চিহ্ন পর্যন্ত মুছে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধ ডা. হাসেম সরওয়ার বলেন, এটাতো রাবারড্যাম নয়, খাল কেটে কুমির আনার মতো অবস্থা। বর্তমান বর্ষা মৌসুম হওয়ায় রাতে চোখে ঘুম নেই। বৃষ্টি নামলেই দুই পাড়ের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু তাহের জানান, রাবারড্যামটি শুরু করার আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খালের দুই পাড়ের মাটি দিয়ে ভরাট ও রাস্তা তৈরি করে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার ফলে তারা কাজ বন্ধ করে দিয়ে মাস খানেক ধরে এলাকার ছেড়ে উধাও হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত মোজাম্মেল হক ও হাজি নুরুন নবী জানান, তীব্র ভাঙনের ফলে তাদের রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, বাগান সবকিছু পানিতে ভেসে গেছে। এতে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। খালের পাড়ে বসবাসরতসহ পথচারী, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা পড়–য়া বেশ কিছু লোক বলেন, রাবার ড্যাম প্রকল্প একদিকে উন্নয়নের কথা বলে নির্মাণের আগেই আমাদের পথের ফকির বানিয়ে ছাড়ছে। জানা যায়, রাবারড্যাম নির্মাণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি খালের পাড় শক্ত করে আরো উন্নত করে বাঁধ দেয়ার নামে খালের দুই পাড়ের মাটি কেটে লÐভÐ করে ফেলেছে। পাশাপাশি রাস্তা তৈরি করে দেয়ার নাম করে চলাচলের রাস্তাটিও কেটে ফেলেছে। তাদের কাজের কচ্ছপ গতির ফলে বর্ষা মৌসুম চলে আসে। যার ফলে পাহাড়ি ঢলের তীব্র স্রোতে খালের দুই পাড় ভেঙে শতাধিক বাড়িঘর এখন বিলীন হওয়ার পথে। আগামীতে বন্যা হলে আরো বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া রাবারড্যাম নির্মাণের নামে খালের গভীর অংশ মাত্র ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তাও বর্তমানে মাটিতে তলিয়ে গেছে। এ বিষয়ে রাবারড্যাম প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী নুর মোহাম্মদের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে তার করার কিছুই নেই। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডি আর সেনাল ট্রেডিং কর্পোরেশনের মালিক মো. রাজিবের সঙ্গে মুঠোফোনে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় তারা কাজ বন্ধ রেখেছেন এবং খালের দুই পাড় ভাঙনে মেরামতের জন্য যা প্রয়োজন তাই করে দেবেন। এ ছাড়া গত কিছুদিন আগেও ভাঙন রোধে তিনি কাজ করেছেন বলে জানান। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন রাজঘাট ফারিখালের ওপর রাবার ড্যাম নির্মাণের আগে এক কিলোমিটার করে বেড়িবাঁধ দেয়ার কথা রয়েছে। যা এখনো পর্যন্ত কিছুই হয়নি। যার ফলে পাহাড়ি ঢলে খালের দুই পাড় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এলাকার শত শত লোকজন ফারিখালের তীব্র ভাঙন রোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চাই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App