×

মুক্তচিন্তা

আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা জরুরি

Icon

কাগজ অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০১৮, ০৭:২৪ পিএম

দেশের বিরাট সংখ্যক তরুণশক্তি নিয়ে আমরা স্বপ্ন দেখছি, অথচ প্রতিনিয়ত ইয়াবার নেশায় ধ্বংস হচ্ছে তারুণ্য, জাতির ভবিষ্যৎ। তাই তারুণ্যগ্রাসী ইয়াবার বিস্তার এখন জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত। ইয়াবার থাবা রুখতে হবে যে কোনো মূল্যে। মাদকের অভিশাপ থেকে দেশের যুবসমাজকে বাঁচাতে অসৎ জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধেও সরকারকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।

মাদক নির্মূলে চলমান অভিযানের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিত্যনতুন কৌশলে পাচার হচ্ছে ইয়াবা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে রীতিমতো বোকা বানিয়ে সক্রিয় ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। নারকেল, আম, জুতা, মাছ, মোবাইল ফোন সেট ও পায়ুপথে করেও আসছে ইয়াবা। চাহিদা মেটাতে বেড়েছে সব ধরনের মাদকদ্রব্যের দামও। এই যদি হয় বাস্তব পরিস্থিতি তাহলে মাদক নির্মূল অভিযান কতটা সফল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক। তবে পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা ও সক্রিয়তাও যে এই মরণ থাবা থেকে বাঁচার বড় পথ- সেটি আমাদের মনে রাখতে হবে।

মাদকের সরবরাহ বন্ধ এবং শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা না গেলে চলমান মাদকবিরোধী অভিযান কতটা সফল হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অপরাধ বিশ্লেষকরা। সরবরাহ বন্ধের প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, সমাজে ছড়িয়ে থাকা মাদকের বিষ সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত কিংবা পরিস্থিতির পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। মাদকের বিস্তার রোধে গত ১৮ মে থেকে দেশব্যাপী বিশেষ অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। চলমান অভিযানে এ পর্যন্ত সারা দেশে গ্রেপ্তার হয়েছে ২২ হাজার মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী, মামলা হয়েছে ১৪ হাজার ৯৩৩টি। বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে ১৫৩ জন। বন্দুকযুদ্ধে নিহতদের নিয়ে নানা মত দেখা দিলেও এই অভিযান সফল হিসেবে দেখছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আমরা মনে করি, মাদক নির্মূলে আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতাও প্রয়োজন। তা না হলে এটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। দেশে বিভিন্ন মাদক আসক্তিতে যারা জড়িত যেমন ইয়াবা, ফেনসিডেল, হেরোইন, গাঁজা, নেশার ইনজেকশন, মদ জাতীয় পানীয় ইত্যাদিতে যারা আসক্ত তাদের সংখ্যা ৬৬ লাখের উপরে চলে গেছে। বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি কোঠায় এরা অন্তর্ভুক্ত। এদের মধ্যে তরুণ মাদকসেবীর সংখ্যা ৬৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। এরা অধিকাংশই সেবন করছে ইয়াবা। মাদকবিরোধী অভিযানে ইয়াবা প্রবেশে কিছুটা ভাটা পড়লেও চড়া দামে ইয়াবা সংগ্রহ করছে। দেশের বিরাট সংখ্যক তরুণশক্তি নিয়ে আমরা স্বপ্ন দেখছি, অথচ প্রতিনিয়ত ইয়াবার নেশায় ধ্বংস হচ্ছে তারুণ্য, জাতির ভবিষ্যৎ। তাই তারুণ্যগ্রাসী ইয়াবার বিস্তার এখন জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত। ইয়াবার থাবা রুখতে হবে যে কোনো মূল্যে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে যে সব চিহ্নিত প্রভাবশালী ব্যক্তি রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে সব সদস্য তাদের সহায়ক, সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কড়া পদক্ষেপ দেশবাসীর মনে আশা জাগিয়েছে। মাদকের অভিশাপ থেকে দেশের যুবসমাজকে বাঁচাতে অসৎ জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধেও সরকারকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App