×

জাতীয়

মাতামুহুরীতে তলিয়ে যাওয়া ৫ ছাত্রের ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০১৮, ০৯:৫৬ পিএম

মাতামুহুরীতে তলিয়ে যাওয়া ৫ ছাত্রের ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার

কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাতামুহুরি নদীর ভরাট চরে ফুটবল খেলে গোসল করতে নেমে ছয় স্কুলছাত্র নিখোঁজের পর একজন জীবিত ও তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ অপর দুইজনকে উদ্ধারে অভিযান চলছে।

আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে চকরিয়া মাতামুহুরী নদীর ব্রিজের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিখোঁজ স্কুলছাত্ররা হলো, ১০ শ্রেণির ছাত্র সায়ীদ জাওয়াদ অরভি, আমিনুল হোসাইন এমশাদ, তূর্য ভট্টাচার্য, মো. ফারহান বিন শওকত, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মেহরাব হোসেন ও মারুফুল ইসলাম জামি। দশম শ্রেণির সব ছাত্রই চকরিয়া গ্রামার স্কুলের ছাত্র।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে চকরিয়া গ্রামার স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, স্কুলের অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা শেষে স্কুলের ছয় ছাত্র মাতামুহুরী নদীর চরে ফুটবল খেলতে যায়। ফুটবল খেলা শেষে তারা নদীতে গোসল করতে নামলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিখোঁজ ছাত্রদের সন্ধানে নামার চার ঘণ্টা পর জেলেরা জাল ফেলে সন্ধ্যা ৭টা থেকে সাড়ে ৭টার মধ্যে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে। তারা হলো আনোয়ার হোসেনের দুই ছেলে দশম শ্রেণি পড়ুয়া আমিরুল হোসেন এমশাদ (১৫) ও অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া আফতাব হোসেন মেহরাব (১২), শওকত আলীর ছেলে ফারহান বিন শওকত (১৫)। নিখোঁজ অপর দুইজনের সন্ধান অব্যাহত রয়েছে।

চকরিয়া গ্রামার স্কুলের শিক্ষক জাহেদুল ইসলাম নদী পাড়ের কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বলেন, ‘স্কুলের অর্ধ-বার্ষিকীর পরীক্ষা শেষ হয় আজ। উচ্চতর গণিত পরীক্ষা শেষে আমাদের স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের ২২ জন ও অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র মাতামুহুরী ব্রিজ সংলগ্ন নদীর চরে ফুটবল খেলতে যায়। তারা ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ফুটবল খেলে দুই ভাগে বিভক্ত হয়। খেলা শেষে পাশের একটি বাড়ি থেকে তারা পানি পান করে নদীতে গোসল করতে নামে। সাতজন চরের মধ্যে অবস্থান করলেও নদীর একপাশ দিয়ে দশজন ও অন্যপাশ দিয়ে ছয়জন নদীতে নামে। নদীতে নামা ছয়জন মাঝ নদীতে গোসল করতে নামামাত্রই চোরাবালিতে আটকে ডুবে যায়।’

স্কুলশিক্ষক জাহেদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এ সময় মারুফুল ইসলাম জামি ডুবে যেতে থাকলে নদীতে থাকা একটি ডিঙ্গি নৌকার লোকজন থাকে জীবিত উদ্ধার করে প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যায়। অপর পাঁচজন নিখোঁজ হলে স্থানীয় লোকজনসহ দমকল বাহিনীর লোকজন তাদের জাল ফেলে ও ডুব দিয়ে টানা তিন ঘণ্টা সন্ধান করেও খোঁজ পায়নি।’

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘স্থানীয় একদল জেলে জাল নিয়ে খুঁজতে নামলে সন্ধ্যা ৭টার পর তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।’

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নিখোঁজ ছাত্রদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি দুজনের উদ্ধারের অভিযান চলছে।

এদিকে, ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলের ছুটে যান চকরিয়া উপজেলা সরকারি কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার মো. ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত। তার নেতৃত্বে চলছিল উদ্ধার অভিযান।

খোন্দকার মো. ইখতিয়ার উদ্দীন বলেন, কক্সবাজারের কোথাও ডুবুরি দল পাওয়া যায়নি। চট্টগ্রামে খবর দেওয়া হয়েছে। এর আগেই স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস বাহিনী ও এলাকার লোকজন নানাভাবে খোঁজ করে একজনকে জীবিত ও তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে।

নদী চরে উপস্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম বলেন, এমন মর্মান্তিক ঘটনা চকরিয়ায় অতীতে আর ঘটেনি। যেকোনো উপায়ে নিখোঁজদের উদ্ধার করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App