×

পুরনো খবর

নির্ভার বিএনপি : জোট নয় দলীয় প্রার্থী চায় আ.লীগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০১৮, ০৩:৫২ পিএম

নির্ভার বিএনপি : জোট নয় দলীয় প্রার্থী চায় আ.লীগ
রাজশাহী সিটি নির্বাচনের দামামা যখন বাজছে তখন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা পেয়েছেন নিজেকে গুছিয়ে নেয়ার সুযোগ। সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থিতার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে রাজশাহী সদর আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক এমপি মিজানুর রহমান মিনু তার অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন। অন্যদিকে ১৪ দলীয় জোট সরকারের দুই মেয়াদের সংসদ সদস্য বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা সংসদ সদস্য পদে থাকায় সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের নৌকা প্রতীকের প্রচারণায় থাকতে পারছেন না। তবে ১৪ দলের পুরো সমর্থন আছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে। নগর পিতার আসনের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগীয় আসনে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে ভোটের মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী। তারা এবার জোট নয়, দলীয় প্রার্থী চান এ আসনে। প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা মÐলীর সদস্য প্রাক্তন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল খালেককে প্রার্থী করা হলেও পরে জোটের প্রার্থী হিসেবে ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশার নাম ঘোষণা করা হয়। রাজশাহী সদর আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সিনিয়র সহসভাপতি শাহীন আক্তার রেনী, সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল ও মহানগর যুবলীগ সভাপতি রমজান আলীর নাম আসছে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা মÐলীর সদস্য প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল খালেক অনাগ্রহের কথা জানিয়ে বলেন, রাজশাহী সদর আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার কোনো আগ্রহ তার নেই। শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন তাকে জেতাতে আমরা সর্বোচ্চ শ্রম দেব। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, দুবার ওয়ার্কার্স পার্টির এমপি আছেন। এ সময়ের পুরোটায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বঞ্চিত হয়ে আসছেন। ক্ষমতায় থেকেও আমরা নেতাকর্মীদের জন্য কিছু করতে পারিনি। উন্নয়মূলক কাজে আমাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়নি। অথচ আওয়ামী লীগের ভোট অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এই ভোটকে কাজে লাগাতে তিনি সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থিতা চাইবেন। তবে আপাতত তারা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন। দলীয় সব পর্যায়ের নেতাকর্মী জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হেনার সন্তান খায়রুজ্জামান লিটনকে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী করে আনতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাদের নেতা এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও সদর আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিজয় হলে রাজশাহীর উন্নয়ন আরো বেগবান হবে। বিভাগীয় শহরের মধ্যে আন্দোলন-সংগ্রামে রাজশাহীর অবস্থান অগ্রগণ্য। এ আসনে ছাড় দেয়া দলের জন্য মঙ্গলকর হবে না। সাম্যবাদী দলের মহানগর সম্পাদক মাসুদ রানা বলেন, ইসি নিবন্ধিত দল হিসেবে সাম্যবাদী দল জোটভুক্তভাবে ও জোটের বাইরে নির্বাচনে অংশ নেবে। স্বভাবতই আমরা দলকে সংগঠিত করতে নির্বাচনে অংশ নিতে চাই। গত ১০ বছরে সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা ভাইয়ের সঙ্গে আপামর জনগণের কোনো যোগাযোগ নেই। নিজেকে শুধু এলিট শ্রেণির প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। ৯ বছর মেয়াদকালে তিনি ১৪ দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি। কেউ কেউ নিজ থেকে এগিয়ে এলেও মূল্যায়ন হয়নি। রাজশাহীতে অসংখ্য সংকট বিরাজমান। কিন্তু দৃশ্যমান সংকট সমাধানের জায়গায় তাকে আমরা দেখতে পাইনি। এদিকে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে মিজানুর রহমান মিনুর নাম আসার অনেকগুলো কারণ চিহ্নিত করেছেন নেতাকর্মীরা। মেয়র ও এমপি থাকাকালীন টানা ১৭ বছরে রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কার, ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং-বিআইটিকে পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় করা অর্থাৎ রাজশাহী প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-রুয়েট প্রতিষ্ঠা, মহিলা পলিটেকনিক, নগরভবন (১৯৯৯), দৃষ্টিনন্দন রেলস্টেশন তৈরি (২০০৪), সাধারণ জনগণ যেন ভোগান্তিতে না পড়েন সে বিষয়ে সচেতন ছিলেন তিনি। হোল্ডিংট্যাক্স বাড়াননি, সহনীয় রাখতে সচেষ্ট ছিলেন। ২০০২ সালে রাজশাহী মহানগরীকে মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় নিয়ে আনেন। সমাজে যৌনকর্মীদের মূল¯্রােতে ফিরিয়ে আনতে তাদের কর্মসংস্থান এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৪৪ জন নেতাকর্মীর নিয়োগের ব্যবস্থা করেছেন তিনি। মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শফিকুল হক মিলন বলেন, সংসদ সদস্য ও তিন মেয়াদে ১৭ বছর মেয়র হিসেবে মিজানুর রহমান মিনু প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। মনোনয়নের বিষয়ে হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তই চ‚ড়ান্ত। মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রমাণিক দেবু বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামে ভ‚মিকার কারণে রাজশাহী সদর আসনে ফজলে হোসেন বাদশাকে ২০০৮ সালে প্রার্থী করা হয়েছিল। সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি যে ভ‚মিকা রেখেছেন, অতীতের কোনো সংসদ সদস্য তা রাখতে পারেননি। দৃশ্যমান উন্নয়নে রাজশাহীর অধিকারের দাবিগুলো জাতীয় সংসদে তুলে ধরেছেন, যা এ অঞ্চলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি আবারো বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে আসবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App