×

শিক্ষা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু নির্যাতন বেড়েছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০১৮, ১১:২২ এএম

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু নির্যাতন বেড়েছে
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। ৮০ ভাগ শিশু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, নয়তো বাড়িতে নির্যাতনের শিকার হয়। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর প্রথম পাঁচ মাসের (জানুয়ারি থেকে মে) তুলনায় চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে ৬৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। ২০১৭ সালে প্রথম পাঁচ মাসে ২৫ জন শিশু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্যাতনের শিকার হয়। চলতি বছর এ সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৮। জানা যায়, শাস্তি ও নির্যাতন বন্ধে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ ১৯৮৯ এর অনুচ্ছেদ-৩(১), ১৯(১), ৩৭(১), ৩৭(২), ৩৭(৩) অনুসারে শিশুদের শারীরিক শাস্তি দেয়া নিষিদ্ধ। এরপরও বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তির হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ২০১০ সালের ১৮ জুলাই ব্লাস্ট এবং আইন ও সালিস কেন্দ্র যৌথভাবে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি দেয়ার নামে নির্যাতনকে সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করে। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বন্ধে নীতিমালা চূড়ান্ত করে তার আলোকে ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দেয়। এর সঠিক বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০১০ সালের ৯ আগস্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের শারীরিক শাস্তি বন্ধকরণ প্রসঙ্গে একটি পরিপত্র জারি করা হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ১১ ধরনের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি নিষিদ্ধ করে ২০১১ সালে একটি নীতিমালা-২০১১ জারি করে। এরপর ২০১৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের শারীরিক শাস্তি দেয়া বন্ধকরণ প্রসঙ্গে আরো একটি পরিপত্র জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মা-বাবা, বংশ পরিচয়, গোত্র-বর্ণ ও ধর্ম সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য, অশোভন অঙ্গভঙ্গি করা বা শিক্ষার্থীদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে এমন বিষয়গুলোও মানসিক শাস্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ ধরনের শাস্তি দেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া যাবে। শিশু সংগঠক ও মানবাধিকারকর্মী অধ্যাপক ড. মাহফুজা খানম ভোরের কাগজকে বলেন, ২৬ মার্চ রাতে ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ হোস্টেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ৯ ছাত্রকে হোস্টেল সুপার রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছেন। এ ঘটনা প্রমাণ করে শিক্ষকরা এখনো মনে করেন তারা শিক্ষার্থীদের মারতে পারেন। শিশু মনোবিজ্ঞান সম্পর্কে শিক্ষকদের এখনো ধারণা অনেক কম। এ বিষয়ে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের প্রভাব সম্পর্কে উত্তরা মেডিকেল কলেজের শিশু মনোবিজ্ঞানী ডা. চিরঞ্জীব বিশ্বাস জানান, শারীরিক শাস্তিতে শিক্ষার্থীর দেহের চেয়ে মনের ওপর বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এতে শিক্ষার্থীর জীবন চরম ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App