ব্রেকিং |
ইউরোপ নিশ্চয়তা না দিলে চুক্তি বাতিলের হুমকি ইরানের
কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০১৮, ০৯:৩৯ পিএম
২০১৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা ইরানের পারমাণবিক চুক্তি অনুযায়ী, ইইউ ইরানকে প্রতিশ্রুত নিশ্চয়তা না দিলে চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার হুমকি দিলো ইরান। আর ইরান এসব নিশ্চয়তা চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে নতুন করে কোন অবরোধ আরোপের আগেই।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জাভেদ জারিফ চুক্তিতে থাকা ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর কাছ থেকে দ্রুত এসব নিশ্চয়তা পাওয়ার দাবি জানান। আগামী আগস্ট থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করতে যাওয়া নতুন অবরোধের আগেই তা পাওয়ার বিষয়ে জোর দাবি জানা জাভাদ।
ভিয়েনায় চুক্তিতে থাকা সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সঙ্গে এক সম্মেলনে গত শুক্রবার এই দাবি জানান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে গত মে মাসে এই চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ায় এই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।
অস্ট্রিয়ার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের জাভাদ জারিফ বলেন, ‘চুক্তি বাস্তবায়নের সময় চলে এসেছে। আমাদের সবার মাথায়ই আছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অবরোধ আরোপের সময় এগিয়ে আসছে। আর তার আগেই আমাদেরকে কিছু না কিছু করতে হবে’।
এর আগে সম্মেলনে ইইউ থেকে প্রতিশ্রুত অর্থনৈতিক সাহায্য না পেলে ‘জয়েন্ট কমপ্রেহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন’ নামে পরিচিত ঐ চুক্তি থেকে নিজেদের সরে আসার হুমকি দেয় ইরান।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় অবরোধ আরোপের পর চুক্তির কোন সদস্য রাষ্ট্র যদি ইরানের সাথে ব্যবসায়িক এবং ব্যাংকিং কার্যক্রমে লিপ্ত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধেও ‘শাস্তিমূলক ব্যবস্থা’ দেওয়ার ঘোষনা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে তার আগেই ইরানকে অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করার কথা জানিয়েছে ফ্রেঞ্চ পররাষ্ট্র মন্ত্রী জিন ইভস-লে দ্রিয়ান।
দ্রিয়ান বলেন, ‘প্রথম দফায় আগস্টে এবং দ্বিতীয় দফায় নভেম্বরে ইরানের ওপর অবরোধ আরোপ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আমরা ইইউ ভুক্ত দেশগুলো এর আগেই ইরানের জন্য একটি অর্থনৈতিক ‘প্যাকেজ’ চালু করার চেষ্টা করছি আমরা। তবে আগস্টের আগে সময় খুবই কম। নভেম্বেরের মধ্যে এই সাহায্য আসতে পারে’।
তবে ইরানকে তাদের ক্রমাগত ‘হুমকি’ প্রদান থেকে বিরত থাকতে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ফ্রেঞ্চ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেইকো মাস বলেন, অবরোধের কারণে ইরান থেকে যেসব প্রতিষ্ঠান নিজেদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেবে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে পারবে না বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোও। এর জন্য আরও দেনদরবার প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক নীতি নির্ধারনী বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মঘেরিনি এর মধ্যস্থতায় ভিয়েনার এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জার্মানী, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া এবং চীনের উর্ধ্বতন কূটনীতিকেরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পারমাণবিক অস্ত্র বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি দল।