×

জাতীয়

মাতারবাড়ীতে পাঁচশ পরিবার পানিবন্দি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০১৮, ০৫:০৪ পিএম

মাতারবাড়ীতে পাঁচশ পরিবার পানিবন্দি
মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নের প্রায় পাঁচশরও বেশি পরিবারের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দি রয়েছেন। মাতারবাড়ীতে দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প হওয়ার সুবাদে ইউনিয়নের চতুর্দিকে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করছে জাইকা ও কোল-পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি। কিন্তু বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে গিয়ে আগে সব সুইচগেট ও চিংড়ি ঘেরের পলবোট ছিল তা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে কোল-পাওয়ার জেনারেশন কর্তৃপক্ষ এবং পানি নিষ্কাশনের জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় পুরো মাতারবাড়ীতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে অন্তত পাঁচশরও বেশি পরিবার বর্তমানে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। উক্ত পরিবারগুলোর প্রায় ২০ হাজার সদস্য সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। পানিবন্দি বানিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তারা দীর্ঘদিন যাবত পানির সঙ্গে বসবাস করে এলেও তাদের কোনো ধরনের ত্রাণ দিয়ে সহযোগিতা করেনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংস্থা। এতে তাদের জীবনযাপন আরো বেশি কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তারা আরো জানান, মাতারবাড়ীতে বড় বড় দুটি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ২ হাজার ৬০০ একর জায়গা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আবদারে সাড়া দিয়ে অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন মাতারবাড়ীবাসী। তাতে প্রধানমন্ত্রীও খুশি হয়েছেন মাতারবাড়ীর মানুষের প্রতি। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী মাতারবাড়ীর মানুষকে সব ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের সুযোগ দিলেও এক শ্রেণির দালাল সাধারণ জনগণের অধিকার বঞ্চিত করে নিজেদের পকেট ভারী করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, গত গ্রীষ্মে দুই প্রকল্পের বাইরে শত শত একর লবণ মাঠ পানির অভাবে চাষ করতে পারেনি স্থানীয়রা। চলতি বর্ষায় বৃষ্টির পানি আর জোয়ারের পানি প্রবেশ করে এখন স্বপ্নের সিঙ্গাপুরখ্যাত মাতারবাড়ীতে বন্যার সৃষ্টি হয়ে ২০ হাজার নারী-পুরুষ এক মাস যাবত পানিবন্দি হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। এতে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কোল-পাওয়ার কর্তৃপক্ষ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করায় এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাতারবাড়ী দক্ষিণ রাজঘাট ও ফুলজান মোরা এলাকার মানুষের কষ্ট আর স্কুল মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতের অসুবিধাসহ রান্না-বান্না করাও ভীষণ কঠিন হয়ে পড়েছে তাদের। রাঙ্গাখালী বাঁধের ওপর কোল-পাওয়ার কর্তৃক ¯øুইচ গেট নির্মাণের বরাদ্দ হলেও বর্ষার পানি বেড়ে যাওয়ায় তা আর নির্মাণ করা যাচ্ছে না বলে জানান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ। তবে আপাতত পানি নিষ্কাশনের জন্য শিগগিরই পলবোটের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে একই কথা জানান, কক্সবাজার জেলা পরিষদের সদস্য মাস্টার রুহুল আমিন। তিনি বলেন, মাতারবাড়ীর জলাবদ্ধতার কথা ইতোমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। তারা অতি শিগগিরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App