×

মুক্তচিন্তা

বিচারকাজ দ্রুত শুরু হোক

Icon

কাগজ অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০১৮, ০৯:৩০ পিএম

হলি আর্টিজানসহ সব জঙ্গি হামলার বিচার যাতে দ্রুত নিষ্পন্ন হয় তার জন্য সচেষ্ট থাকবেন সংশ্লিষ্টরা। হলি আর্টিজানের নৃশংসতার পুনরাবৃত্তি যাতে এ দেশে আর কোনোভাবেই ঘটতে না পারে তা নিশ্চিত করতে দৃঢ় অঙ্গীকার করতে হবে আমাদের। জঙ্গিবিরোধী অভিযান আরো সুপরিকল্পিত-সুসমন্বিত করার পাশাপাশি জঙ্গিদের অর্থের উৎস ও রাজনৈতিক মদদ শনাক্ত করে তা বন্ধ করতে হবে। রোধ করতে হবে সমাজে জঙ্গি ভাবাদর্শের বিস্তারও।

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার দুই বছর পূর্ণ হলো গতকাল। দেশি-বিদেশিসহ মোট ২২ জনকে হলি আর্টিজানে জঙ্গিরা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। সেই বিভীষিকাময় ঘটনার কথা মনে হলে নিহতদের স্বজনরা আঁতকে উঠেন। তারা দাবি করে আসছেন বিচার প্রক্রিয়া যেন শুরু হয়। আশার কথা, বর্বরোচিত এই হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র প্রস্তুত করেছে তদন্তকারী সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। তদন্তে এই হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ২১ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে সিটিটিসি। এদের মধ্যে ঘটনার পর কমান্ডো অভিযানে নিহত পাঁচ হামলাকারী ছাড়াও আরো আট জন মারা গেছে সিটিটিসি ও র‌্যাবের অন্যান্য অপারেশনে। গ্রেপ্তার হওয়া ছয় আসামি ইতোমধ্যে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। দুই জনকে পলাতক দেখিয়ে অভিযোগপত্র প্রস্তুত করেছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা।

২০১৬ সালের পহেলা জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে রেস্তোরাঁয় প্রবেশ করে ২০ বিদেশি নাগরিকসহ ৩০ থেকে ৩৫ জনকে জিম্মি করে রাখে এবং রাতভর হত্যাযজ্ঞ চালায়। পরদিন সকালে রেস্তোরাঁয় জিম্মিদের উদ্ধারে কমান্ডো অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী। অভিযান শেষে যৌথ বাহিনী বিদেশি নাগরিকসহ মোট ১৩ জনকে জীবিত এবং মোট ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। অভিযানে ছয় জঙ্গিও নিহত হয়। আমরা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি সেই সব দেশি-বিদেশি মানুষকে যারা জঙ্গি হামলায় চিরতরে আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেছেন। আমরা তাদের স্বজনদের প্রতি জানাই সহমর্মিতা। ধিক্কার জানাই জঙ্গি হন্তারকদের প্রতি। তদন্তের বিভিন্ন পর্যায়ে বেরিয়ে এসেছে এই নৃশংস হামলা ঘটানোর জন্য জঙ্গিরা দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ নিয়ে আসছিল। গুলশান হামলার পর পর শোলাকিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আরো কয়েকটি জঙ্গি হামলা সংঘটিত হয়েছে। আরো নাশকতার পরিকল্পনা ছিল তাদের। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সদস্যরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তাদের সেই সব পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে সক্ষম হয়েছেন। অনেক জঙ্গিকে তারা পাকড়াও করতে সক্ষম হয়েছেন। অনেক জঙ্গি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর অভিযানে মারাও গেছে। হলি আর্টিজানে হামলায় জড়িত ছিল এ রকম আটজন বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছে। এর বাইরে ওই ঘটনার যারা পরিকল্পনাকারী, সহায়তাকারী এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভ‚মিকা রেখেছে এ রকম অনেককেও চিহ্নিত করা হয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের দাবি। আমরা আশা করব, হলি আর্টিজানসহ সব জঙ্গি হামলার বিচার যাতে দ্রুত নিষ্পন্ন হয় তার জন্য সচেষ্ট থাকবেন সংশ্লিষ্টরা। হলি আর্টিজানের নৃশংসতার পুনরাবৃত্তি যাতে এ দেশে আর কোনোভাবেই ঘটতে না পারে তা নিশ্চিত করতে দৃঢ় অঙ্গীকার করতে হবে আমাদের। জঙ্গিবিরোধী অভিযান আরো সুপরিকল্পিত-সুসমন্বিত করার পাশাপাশি জঙ্গিদের অর্থের উৎস ও রাজনৈতিক মদদ শনাক্ত করে তা বন্ধ করতে হবে। রোধ করতে হবে সমাজে জঙ্গি ভাবাদর্শের বিস্তারও।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App