×

জাতীয়

ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শিগগিরই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০১৮, ১১:৩৮ এএম

ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শিগগিরই
শুনানির জন্য প্রস্তুত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল। গত মার্চ মাসে মামলাটি শুনানির জন্য বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে পাঠানো হয়। কিন্তু তখন সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শুরু হওয়ায় এ মামলার শুনানি শুরু হয়নি। অবকাশের পূর্বে মামলাটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের দৈনন্দিন কার্যতালিকার তিন নম্বর ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত ছিল। অবকাশ শেষে গতকাল রবিবার সুপ্রিম কোর্টের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পুনর্গঠিত হয়েছে হাইকোর্টের বেঞ্চ। তবে পুনর্গঠিত হলেও এই বেঞ্চের এখতিয়ার পরিবর্তন না হওয়ায় দ্রুতই আপিল শুনানি শুরু হবে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ গতকাল ভোরের কাগজকে বলেন, চাঞ্চল্যকর এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য আমরা (রাষ্ট্রপক্ষ) প্রস্তুত রয়েছি। অবকাশ শেষে সুপ্রিম কোর্টের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তিনি জানান, হাইকোর্টের বেঞ্চ পুনর্গঠন হলেও এই বেঞ্চের এখতিয়ার পরিবর্তন হয়নি। আশা করি, দ্রুত শুনানি শুরু হবে। বিএনপি-জামায়াত চার দলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের পহেলা এপ্রিল চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) ঘাট থেকে ১০ ট্রাক ভর্তি অস্ত্রের চালান আটক করা হয়। ওই ঘটনায় নগরীর কর্ণফুলী থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও অস্ত্র আইনে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করে পুলিশ। অস্ত্র আটক ও চোরাচালান মামলায় ২০০৪ সালের ১১ জুন ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৭ সালের ১৯ নভেম্বর সেনাসমর্থিত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে মামলা দুটির অধিকতর তদন্ত শুরু হয়। তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ২৬ জুন জামায়াতের আমির ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১১ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে পুলিশ। এর মধ্যে চোরাচালান মামলায় ৫২ জনকে এবং অস্ত্র আইনের মামলায় ৫০ জনকে আসামি করা হয়। এরপর অভিযোগ গঠন, সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক এস এম মজিবুর রহমান এই দুই মামলার রায় ঘোষণা করেন। বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা চোরাচালানের মামলার রায়ে মতিউর রহমান নিজামী, লুৎফুজ্জামান বাবর ও শীর্ষ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তাসহ ১৪ আসামিকে মৃত্যুদন্ড দেন আদালত। পাশাপাশি অস্ত্র আইনের মামলায় তাদের যাবজ্জীবন দন্ড দেয়া হয়। দন্ডিত অন্য আসামিরা হলেন ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আবদুর রহিম, পরিচালক উইং কমান্ডার (অব.) সাহাব উদ্দিন আহাম্মদ, উপপরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন, এনএসআইয়ের মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন উদ্দিন তালুকদার, মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কে এম এনামুল হক, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নুরুল আমিন, অস্ত্র বহনকারী ট্রলারের মালিক হাজি সোবহান, চোরাকারবারি হাফিজুর রহমান এবং অস্ত্র খালাসের জন্য শ্রমিক সরবরাহকারী দ্বীন মোহাম্মদ। দুটি মামলায় বেকসুর খালাস দেয়া হয় ৩৮ জনকে। ওই রায় ঘোষণার পর মামলাটি ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি কারাগার থেকে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন দন্ডিত আসামিরা। এরপরই বিশেষ ব্যবস্থায় প্রস্তুত করা হয় পেপারবুক। পেপারবুক প্রস্তুতের পরই মামলাটি শুনানির জন্য হাইকোর্টে পাঠান প্রধান বিচারপতি। ডেথ রেফারেন্স ও আপিল হাইকোর্টে বিচারাধীন থাকাবস্থায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড দেয়া হয় নিজামীকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের ওই রায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বহাল রাখলে ২০১৬ সালের ১০ মে নিজামীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে সরকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App