×

মুক্তচিন্তা

জনগণের প্রত্যাশার পূর্ণতা দিতে পারে নির্বাচন কমিশন

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০১৮, ০৭:৪৫ পিএম

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরপরই বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। এ বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত হতে পারে জাতীয় নির্বাচন। ফলে দেশব্যাপী এখন নির্বাচনী হওয়া বইছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন কেমন হবে এরই ইঙ্গিত পাওয়া যাবে সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। সেদিক থেকে নির্বাচন কমিশনের জন্য এই নির্বাচনগুলো অগ্নিপরীক্ষা।

আগামীকাল গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নগরবাসী বেছে নেবে তাদের আগামী দিনের নগর প্রতিনিধিকে। নগর ব্যবস্থাপনা ও সেবা প্রদানের প্রেক্ষাপট থেকে যেমন, দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকেও তেমনি এ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। তবে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার সময়টাও মোটামুটি শান্তিপূর্ণ কেটেছে, প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীদেরও পরস্পরের প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ লক্ষণীয় ছিল। গত ১৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। জমে উঠেছিল নির্বাচনের প্রচারও। কিন্তু একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৬ মাসের জন্য ওই নির্বাচনে স্থগিতাদেশ দেয়া হয় হাইকোর্ট থেকে। এরপর এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলে ১০ মে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ২৮ জুনের মধ্যে বেঁধে দেয়া হয় ভোটগ্রহণের সময়। নির্বাচনে মেয়র পদে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের মো. জাহাঙ্গীর আলম (নৌকা) ও বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার (ধানের শীষ) মধ্যে। রিটার্নিং কর্মকর্তার দেয়া হিসাব মতে, এবার নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। গত নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৮ জন। এ হিসাবে নতুন ভোটার বেড়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৭৯৮ জন। এদের অধিকাংশ নবীন ভোটার। নির্বাচনে এরা প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কমিশন সব প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। রোববার থেকে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসারসহ প্রায় ১২ হাজার নিরাপত্তা কর্মী মাঠে নেমেছে। স্থানীয় নির্বাচন কমিশন বলছে, ৪২৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৩৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং বাকি ৮৮টি কেন্দ্র সাধারণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোর জন্য ২৪ জন এবং সাধারণ কেন্দ্রের জন্য ২২ জন করে সশস্ত্র পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখার অপেক্ষায় দেশবাসী। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরপরই বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। এ বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত হতে পারে জাতীয় নির্বাচন। ফলে দেশব্যাপী এখন নির্বাচনী হওয়া বইছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন কেমন হবে এরই ইঙ্গিত পাওয়া যাবে সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। সেদিক থেকে নির্বাচন কমিশনের জন্য এই নির্বাচনগুলো অগ্নিপরীক্ষা।

নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের দায়িত্ব হলো ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, তার অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা। কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন এর আগে খুলনা, কুমিল্লা ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন করে সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে। সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের যেমন, তেমনি অংশগ্রহণকারী প্রার্থী, ভোটার এবং সমর্থনদানকারী রাজনৈতিক দলগুলোরও দায়িত্বশীল ভ‚মিকা প্রত্যাশা করছি আমরা। নির্বাচনে প্রার্থীদের জয়-পরাজয় থাকবে, ভোটারদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তা খোলামনে মেনে নেয়াই গণতন্ত্রের শিক্ষা। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনটি হোক দৃষ্টান্তযোগ্য- আমাদের এই প্রত্যাশার পূর্ণতা দিতে পারে নির্বাচন কমিশন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App