×

জাতীয়

শেষ সময়ে বৃষ্টি-কাদা উপেক্ষা করে ছুটছেন প্রার্থীরা

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০১৮, ১০:২৯ পিএম

শেষ সময়ে বৃষ্টি-কাদা উপেক্ষা করে ছুটছেন প্রার্থীরা
শেষ সময়ে বৃষ্টি-কাদা উপেক্ষা করে ছুটছেন প্রার্থীরা
গাজীপুর সিটি নির্বাচনের বাকি আর মাত্র দুই দিন। কাল রবিবার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনী প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে। তাই শেষ সময়ে জোরদার প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। বৃষ্টি ও কাদা উপেক্ষা করে ছুটছেন ভোটারদের কাছে। নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে ছুটছেন কেন্দ্রীয় নেতারাও। এদিকে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কর্মযজ্ঞ চলছে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে। এরই মধ্যে কার্যালয়ে এসেছে ব্যালট বাক্স, সিল, গাম, অমোচনীয় কলমসহ নির্বাচনী সামগ্রী। কেন্দ্রে কেন্দ্রে এসব নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। প্রচার-প্রচারণার এই শেষ সময়ে এসে বাইরের জেলার পুলিশ দিয়ে তার নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। এদিকে যানজটে নগরবাসীর ভোগান্তির কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম প্রতিশ্যুতি দিচ্ছেন তিনি নির্বাচিত হলে ৯০ দিনের ভেতর যানজট নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন। শনিবার সকালে জাহাঙ্গীর আলম মহানগরের ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের খরতৈল থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। পরে ৫২ নং ওয়ার্ডের মুদাফা, ৫৩ নং ওয়ার্ডের হোসেন মার্কেট এবং ৫৫ নং ওয়ার্ডের মিলগেট এলাকায় পথসভা ও গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি গাজীপুরকে পরিকল্পিত, পরিবেশবান্ধব ও বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তাকে সুযোগ দিতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সমর্থন চান। ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী বলেন, ‘মানুষ নগরীতে যানজটে পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কষ্ট করে। আমরা একটি আধুনিক শহর করতে চাই। টঙ্গী ও গাজীপুরবাসীর কাছে আমি আবদার করছি। আমাদের একবার নৌকায় ভোট দেন। আমরা সবাই মিলে একটি ক্লিন ও গ্রিন সিটি উপহার দিতে চাই। একটি বাসযোগ্য শহর করতে চাই।’ সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে পথসভায় যোগ দেন। পরে জাহাঙ্গীর আলম সাতাইশ স্কুলের সামনে, সাতাইশ চৌরাস্তা, ৫২ নম্বর মুদাফা, ৫৩ নম্বরে দেওড়া ফকির মার্কেট, ৫৫ নম্বর মিলগেট এলাকায় পথসভায় ভোট প্রার্থনা করেন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম পথসভায় বক্তব্য দেন এবং গণসংযোগে করেন। বেলা তিনটায় টঙ্গী নওয়াগাঁও এলাকায় সংসদ সদস্য মো. জাহিদ আহসান রাসেলের বাসভবনে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে মহানগর নেতারা ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক যোগ দেন। সেখানে মহানগর নেতারা বৈঠক করে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের মহানগর সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান ব্রিফিং করেন। ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লেিগর কেন্দ্রীয় নেতা এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাওছার, সাবেক এমপি কাজী মোজাম্মেল হক, ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র প্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব মো. ইকবাল হোসেন সবুজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ইলিয়াস আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার সকাল থেকে হায়দরাবাদ এলাকায় গণসংযোগ শুরু করে মাজুখান বাজার, নন্দীবাড়ি, বিন্দান ও পুবাইল এলাকায় প্রচারণা চালান। পরে ভাদুন, ইছালী ও কলের বাজার এলাকায় প্রচার কাজ করেন। তার সাথে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক এ কে এম ফজলুল হক মিলন, সদস্যসচিব কেন্দ্রীয় নেতা কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল, কাপাসিয়া থানা বিএনপির সেক্রেটারী সাখাওয়াত হোসেন সেলিম। দেশে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার স্বার্থে দলমত-নির্বিশেষে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করেন হাসান উদ্দিন সরকার। এ সময় তিনি বলেন, ‘প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দিয়েছে নিরপেক্ষ নির্বাচনের, আমরা সেটা বিশ্বাস করেছি। আমাদের বিশ্বাস করা ছাড়া আর উপায়ও নেই, কারণ আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। তবে শেষ পর্যন্ত কী হয়, সেটার অপেক্ষায় রয়েছি।’ তার নেতাকর্মীদের প্রশাসনিক হয়রানির অভিযোগ করে হাসান উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে, বাইরের জেলা থেকে পুলিশ এনে আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করানো হচ্ছে। এটা তাদের (আওয়ামী লীগ দল) নতুন একটি কৌশল। স্বৈরাচারের এখন এটি নতুন কৌশল তারা বের করেছে। তবে বিএনপি এই নতুন কৌশলের মোকাবিলা করবে।’ ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী পাঠানোর প্রস্তুতি ভোট গ্রহণের নির্বাচনী মালামাল বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়। শনিবার সকাল থেকে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে মালামাল পেঁছানোর কাজ শুরু করেন। শহরের বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামের দ্বিতীয় তলায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তারা নির্বাচনী সরঞ্জামগুলো আলাদা ব্যাগে করে প্রস্তুত করছেন। গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডল জানান, ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম এসে পৌঁছেছে। সিটি কর্পোরেশনের ৪২৫টি ভোটকেন্দ্র এসব নির্বাচনী সরঞ্জাম সোমবার থেকে পাঠানো হবে। নির্বাচনী সরঞ্জামের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে সরবরাহ করা হয়েছে সিলসহ স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা, অমোচনীয় কালির কলম, রাবারের অফিসিয়াল সিল (কোড বা গোপন চিহ্ন সম্বলিত), রাবারের মার্কিং সিল, গালা, সিলগালা করার জন্য পিতলের সিল (ব্রাস সিল), স্ট্যাম্প প্যাড, চটের বা গানি ব্যাগ ও চটের ছোট থলি বা হোসিয়ান ব্যাগ (অফিসিয়াল সিল, মার্কিং সিল, পিতলের সিল, স্ট্যাম্প প্যাড, অমোচনীয় কালির কলম ইত্যাদি ভর্তি করে রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট আলাদা ভাবে ফেরত প্রদানের জন্য)। এ ছাড়া স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে বল পয়েন্ট কলম, সাদা কাগজ, কার্বন কাগজ, ছুরি, সুঁই (বড় সাইজ), সুতা, মোমবাতি, দিয়াশলাই, আলপিন, গামপট, সুপার গ্লু, লোহা/প্লাস্টিক/ বাঁশের পাত এবং প্রিন্ট করা দেয়ালপত্র যাতে প্রবেশ, বাহির, ভোটকক্ষ নং, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, পোলিং এজেন্ট ইত্যাদি লেখা থাকবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App