×

পুরনো খবর

চাঁদার ভাগিদার উত্তরা পশ্চিম থানা-পুলিশ

Icon

ইমরান রহমান

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০১৮, ১১:৪৫ এএম

চাঁদার ভাগিদার উত্তরা পশ্চিম থানা-পুলিশ
২০১২ সালে রাজধানীর উত্তরা মডেল থানা ভেঙে গঠন করা হয় উত্তরা ও পশ্চিম থানা। হাউস বিল্ডিং মোড় থেকে এই থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় যেতে রিকশা আর লেগুনাই ভরসা। এ জন্য হাউস বিল্ডিং এলাকায় রাস্তার জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ লেগুনা স্ট্যান্ড। এই স্ট্যান্ডের আওতায় চলাচল করে প্রায় ১০০টি লেগুনা। প্রতিটি লেগুনা থেকে দৈনিক ৩৮০ টাকা করে চাঁদা (লাইনম্যানদের ভাষায় জিপি) উঠায় লাইনম্যান কাউছার। যার ৩ ভাগের এক ভাগ যায় থানা-পুলিশের পকেটে। এ ছাড়া আজমপুর বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশের ফুটপাতের ৩০-৩৫টি দোকান থেকে প্রতিদিন ২৫০ টাকা করে চাঁদা নেয় লাইনম্যান আসলাম। জসিমউদ্দিন এলাকার ৪০টি দোকান থেকে ২৫০ টাকা করে চাঁদা নেয় লাইনম্যান সোহেল। এ ছাড়া রাজল²ী এলাকার ফুটপাত থেকে লাইনম্যান প্রিন্স মুসা ও হাউস বিল্ডিং এলাকার ফুটপাত থেকে লাইনম্যান উজ্জ্বল নিয়মিত চাঁদা তোলে। এসব চাঁদার একটি অংশ চলে যায় থানার কর্তাদের পকেটে। গত ২০ জুন দুপুরে একাধিক লেগুনা চালক, লাইনম্যান ও ফুটপাত ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি মো. আলী হোসেন খান ভোরের কাগজকে বলেন, এটা অসম্ভব। থানা-পুলিশ কোনো চাঁদার ভাগ নেয় না। এটা ট্রাফিক পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের সঙ্গে কথা বলুন। তবে এই থানা এলাকায় কিছু অনিয়ম আছে। আমরা ধীরে ধীরে সেগুলো নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। এদিকে একটি আবাসিক ভবন পুরোটা ভাড়া নিয়ে চলছে উত্তরা পশ্চিম থানার কার্যক্রম। থানাটিতে জনবল ও গাড়ির কিছুটা সংকট রয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, বিভিন্ন মামলায় জব্দকৃত গাড়ি জমিয়ে রাখতে রাখতে সেগুলোর ওপর আগাছা জন্মেছে। থানার গাড়িগুলোও রাখার জায়গা নেই। অন্যদের বাসার সামনে পার্ক করে রাখা হয় সেগুলো। থানার নিচ তলায় ওয়েটিংরুম, দুই তলায় ডিউটি অফিসারের রুম। ফলে একজন পুলিশ সদস্যকে ব্যস্ত থাকতে হয় অভ্যাগতদের দুই তলায় ডাকতে। ডিউটি অফিসারের রুমের পাশেই হাজতখানা। পুরুষ হাজতখানার সামনে অল্প জায়গা গ্রিল দিয়ে আটকিয়ে মহিলা হাজতখানা করা হয়েছে। থানা সূত্র জানায়, এই থানা এলাকায় ৯২টি ব্যাংক রয়েছে। যেখানে কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়। এ ছাড়া রয়েছে গার্মেন্টেসের হাজারখানেক স্টকলট প্রতিষ্ঠান। তাই ছিনতাই ঠেকাতে সব সময় ব্যস্ত থাকতে হয় পুলিশের। থানার সমস্যার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, আমাদের নিজস্ব ভবন নেই এটাই বড় সমস্যা। তবে সোনারগাঁও জনপথে ৬টি প্লট চিহ্নিত করে রাজউকের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তারা চাইলে ওই জায়গার উপরে থানা ভবন হবে। ওই দিন বিকেলের দিকে এক মহিলা থানায় মামলা করেন। ডিউটি অফিসার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে এসআই শাহিনের নাম লিখতে গেলে ওই মহিলা বলেন, শাহিনকে দিলে আমার আপত্তি আছে। তার জন্যই আমার টাকাগুলো গেছে। আমি ডিসি স্যারের কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিব। সে ঘুষ খেয়ে চুপ রয়েছে। আপনি অন্য কাউকে তদন্তভার দেন। থানার কর্মকর্তারা জানান, উত্তরার ৩, ৫, ৭, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর সেক্টর নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানা গঠিত। এই থানায় চলতি বছরে ৩০৮টি মামলা হয়েছে। যার বেশির ভাগই মাদক ও প্রতারণা সংশ্লিষ্ট।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App