×

পুরনো খবর

আওয়ামী লীগ ৩, বিএনপি ৫ সিপিবি ও ইশার একক প্রার্থী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জুন ২০১৮, ০৪:২৫ পিএম

আওয়ামী লীগ ৩, বিএনপি ৫ সিপিবি ও ইশার একক প্রার্থী
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৩ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে কেন্দ্রে জোর লবিং চালাছেন। স্ব স্ব এলাকার সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন তারা। এবারের নির্বাচনে খুলনা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের ৩, বিএনপির ৫, সিপিবি ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের একক সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে নেমেছেন। খুলনা শিল্পাঞ্চল এলাকার খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহান আলী থানার একাংশ নিয়ে খুলনা-৩ আসন গঠিত। এ আসনের মধ্যে রয়েছে সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ১৫নং ওয়ার্ড। দীঘলিয়া উপজেলার আড়ংঘাটা ও যোগীপোল ইউনিয়নও এ আসনের মধ্যে। এ আসন এলাকায় সরকারি-বেসরকারি প্রায় ১০টি পাটকল ও ২০টি জুট গোডাউন রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় অর্ধলাখ শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। তাই শ্রমিকদের ভোটের উপরই নির্ভর করতে হচ্ছে রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের। এ নির্বাচনে খুলনা-৩ আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ১০ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপি, দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা এস এম কামাল হোসেন, বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ও দৌলতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সৈয়দ আলী; বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি রকিবুল ইসলাম বকুল, নগর কমিটির যুগ্ম সম্পাদক তারিকুল ইসলাম, নগর বিএনপির কোষাধ্যক্ষ আরিফুর রহমান মিঠু ও নগর সাংগঠনিক সম্পাদক ফখরুল আলম; জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের নগর সহসভাপতি মাওলনা আব্দুল আওয়াল । একাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এবার আগেভাগেই শুরু হয়েছে নির্বাচনী তোড়জোড়। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলে তরুণ নেতাদের আগাম প্রচার-প্রচারণায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন উদ্যম দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহসভাপতি রকিবুল ইসলাম বকুলের পক্ষে নেতাকর্মীরা মাঠে নামায় রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ সৃষ্টি হয়েছে। খুলনা-৩ আসনটি বেশিরভাগ সময়ই বিএনপির দখলে ছিল। গত নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে এ আসনে বিএনপি জয়লাভ করলেও ১৯৯৬ সালে জয়ের স্বাদ পান আওয়ামী লীগ প্রার্থী। ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন তৎকালীন যুগ্ম মহাসচিব মো. আশরাফ হোসেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় সংস্কারপন্থি হিসেবে ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি দল থেকে বহিষ্কার হন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম। ২০০৮ সালে বিএনপিতে যোগ দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিলেও তিনি পরাজিত হন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বর্তমান এমপি বেগম মন্নুজান সুফিয়ান আবারো প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে গণসংযোগ শুরু করেছেন। এ আসনে মনোনয়নের প্রত্যাশায় রাজনৈতিক মাঠে কাজ করছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রভাবশালী সদস্য সাবেক ছাত্রনেতা এস এম কামাল হোসেন। তার পক্ষে ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের নেতাকর্মীরা প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। ওয়ার্ড পর্যায়ে স্থানীয় নেতারা এরই মধ্যে প্রার্থী পরিবর্তন ও এস এম কামালকে মনোনয়নের দাবিতে কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডে লিখিত দাবি জানিয়েছেন। আশির দশকে খুলনায় দাপটের সঙ্গে ছাত্র রাজনীতি করা কামাল হোসেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় দলীয় কর্মকাণ্ড সরব উপস্থিতি ছাড়াও মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। এবারের খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেককে বিজয়ের জন্য ব্যাপক ভ‚মিকা নিয়েছেন এস এম কামাল। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কামালের আস্থা অনেকটাই বেড়েছে। এ ব্যাপারে এস এম কামাল হোসেন বলেন, আমি দলের জন্য রাজনীতি করি। ছাত্রজীবন থেকে খুলনায় রাজনীতি করেছি। খুলনার মাটি-মানুষের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। দলীয় কারণে ঢাকায় অবস্থান করলেও এলাকার উন্নয়নে ভ‚মিকা রাখার চেষ্টা করি। তবে প্রার্থিতার বিষয়টি নির্ভর করবে দলীয় সভানেত্রীর সিদ্ধান্তের ওপর। দল মনোনয়ন দিলে কাজ করব। না পেলে যাকে দেবে তার পক্ষে কাজ করব। দলের অপর সম্ভাব্য প্রার্থী দৌলতপুর থানা সভাপতি ও বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ সৈয়দ আলী বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের জন্য আমি দীর্ঘদিন কাজ করছি। এবারো দলের কাছে মনোনয়ন চাইব। ২০ দলীয় জোটের সম্ভাব্য প্রার্থী কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম বলেন, এ আসনের সাবেক এমপি হিসেবে আগামী নির্বাচনেও প্রার্থী হতে চাই। দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রাথমিক আলাপ করেই কাজ করছি। এর আগেও দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছি, তাই এবারো আশাবাদী। সাবেক ছাত্রনেতা রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, আমার জীবনের একটি বড় অংশ কেটেছে খালিশপুরে। অনেক বাধা-বিপত্তির মাঝেও মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। আগামী নির্বাচনে আমাকে প্রার্থী করার জন্য তৃণমূল থেকে দাবি উঠেছে। তবে এ মুহূর্তে আমাদের প্রধান কাজ মাদার অব ডেমোক্রেসি দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা। তারপর তাকে নিয়ে আগামী নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে দুঃশাসনের জবাব দেয়া হবে। নির্বাচনে প্রার্থিতার ক্ষেত্রে দলীয় হাইকমান্ড যে সিদ্ধান্ত দেবে তা তিনি মেনে নেবেন বলেও জানান। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আশির দশকের ছাত্রনেতা অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম বলেন, আমি নির্বাচনের জন্য নয়, দলের জন্য কাজ করছি। আর এটি দলীয় নির্বাচন, এখানে ব্যক্তি প্রচারের চেয়ে দলের প্রচারই বেশি প্রয়োজন। দলের কাছে আমি মনোনয়ন চাইব। বিএনপির অপর সম্ভাব্য প্রার্থী নগর কোষাধ্যক্ষ আরিফুর রহমান মিঠু বলেন, হামলা-মামলাকে ভয় না করে আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে ছিলাম। রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়নেও মাঠে আছি। বিগত সময়েও এ আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলাম। দলের কাছে মনোনয়ন চাইব। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি দলীয়ভাবে মনোনয়ন পেয়েছিলাম। দলীয় সিদ্ধান্তে আমি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে তৎকালীন মহাজোটের প্রার্থী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের পক্ষে কাজ করি। আগামী নির্বাচনে আমি দলীয়ভাবে মনোনয়ন চাইব। দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App