×

জাতীয়

কবি নির্মলেন্দু গুণের ৭৪তম জন্মদিন আজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ জুন ২০১৮, ০১:৪৯ পিএম

কবি নির্মলেন্দু গুণের ৭৪তম জন্মদিন আজ
‘সমবেত সকলের মতো আমিও গোলাপ ফুল খুব ভালোবাসি/রেসকোর্স পার হয়ে যেতে সেইসব গোলাপের একটি গোলাপ গতকাল/আমাকে বলেছে, আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি/আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।’ কিংবা ‘আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে/আমি চাই কেউ একজন আমার জন্য অপেক্ষা করুক/শুধু ঘরের ভেতর থেকে দরজা খুলে দেবার জন্য/বাইরে থেকে দরজা খুলতে খুলতে আমি এখন ক্লান্ত।’ নির্মলেন্দু গুণের কবিতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সংগ্রাম, প্রেম-বিরহ, জীবন-প্রকৃতি, স্বপ্ন ধরা দিয়েছে এভাবেই এক অপূর্ব রূপে। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান এই কবির ৭৪তম জন্মদিন আজ। ১৯৪৫ সালের আজকের এই দিনে নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা থানার কাশবন গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। যে বয়সে মায়ের চেয়ে খেলাকেই বেশি ভালোবাসতে শুরু করে শিশুরা, সেই বয়সেই মা বীণাপাণিকে হারান নির্মলেন্দু গুণ। মাত্র ৪ বছর বয়সে। মা মারা যাওয়ার পর তার বাবা আবার বিয়ে করেন। লেখাপড়ার হাতেখড়ি নতুন মা চারুবালার হাতেই। ৩য় শ্রেণিতে, প্রথম স্কুলে ভর্তি হন। বারহাট্টা স্কুলে। পুরো নাম করোনেশন কৃষ্ণপ্রসাদ ইন্সটিটিউট। ক্লাসে বসেই একদিন লিখে ফেলেন একটি ছড়া, স্কুলকে নিয়ে। শুরুটা এভাবেই। ক্লাস এইটে পড়ার সময় ওই স্কুলে আসেন বাংলার নতুন শিক্ষক মুখলেসুর রহমান। তিনি খুব সুন্দর কবিতা আবৃত্তি করতেন। তার মাধ্যমেই এ সময় মধুসূদন দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নজরুল ইসলামের পর কবি জীবনানন্দের কবিতার সঙ্গে প্রথম পরিচিত হন তিনি। এ সময় বারহাট্টার বিখ্যাত রামমঙ্গল গায়েন ছিলেন নরেন্দ্র গায়েন। বিভিন্ন পার্বণে নরেন্দ্র গায়েনের গান অবাক হয়ে গভীর আগ্রহে শুনতেন তিনি। গেরুয়া রঙয়ের ধুতি, পাঞ্জাবি ও উত্তরীয় পরা নরেন্দ্র গায়েন যখন হারমোনিয়াম, খোল, করতাল বাদ্যসহকারে আবেগপূর্ণভাবে রামমঙ্গল পরিবেশন করতেন, তখন সেই কাব্য ও ছন্দের মাধুর্য তাকে নতুন জগতের সন্ধান দিত। কাব্য আর ছন্দের প্রেরণা সেখান থেকেও তিনি পেয়েছিলেন। তারপর আর কলম থামেনি তার। কবি নির্মলেন্দু গুণ কবিতার পাশাপাশি লিখেছেন গল্প এবং ভ্রমণসাহিত্য। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে অন্যতম হলো ‘প্রেমাংশুর রক্ত চাই’, ‘কবিতা, অমীমাংসিত রমণী’, ‘দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী’, ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’, ‘তার আগে চাই সমাজতন্ত্র’, ‘দূর হ দুঃশাসন’, ‘চিরকালের বাঁশি’, ‘দুঃখ করো না, বাঁচো’, ‘আনন্দ উদ্যান’, ‘পঞ্চাশ সহস্র বর্ষ’, ‘প্রিয় নারী হারানো কবিতা’, ‘শিয়রে বাংলাদেশ’, ‘ইয়াহিয়াকাল’, ‘আমি সময়কে জন্মাতে দেখেছি’, ‘বাৎস্যায়ন’, ‘রক্ষা করো ভৈরব’ ইত্যাদি। ‘আপন দলের মানুষ’ শিরোনামে রয়েছে তার একটি গল্পগ্রন্থ। এ ছাড়া লিখেছেন ‘সোনার কুঠার’ নামের একটি ছড়াগ্রন্থ। ‘আমার ছেলেবেলা’, ‘আমার কণ্ঠস্বর’ ও ‘আত্মকথা ’৭১’ শিরোনামে রয়েছে তিনটি আত্মজৈবনিক গ্রন্থ। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য নির্মলেন্দু গুণ পেয়েছেন বেশ কিছু পুরস্কার। তার মধ্যে অন্যতম হলো ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ২০১১ সালে একুশে পদক, ২০১৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App