×

মুক্তচিন্তা

ফেরাও নির্বিঘ্ন হোক

Icon

কাগজ অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০১৮, ১০:১০ পিএম

রবিবার থেকে মানুষ কর্মস্থলে ফেরা শুরু করেছে। এই সময়ে বিভিন্ন পথে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। মঙ্গল ও বুধবার থেকে ট্রেন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে ফিরতি মানুষের ভিড় বাড়বে। চলবে আগামী কয়েক দিন পর্যন্ত। এই সময়টা বিশেষ নজরদারি দরকার। ঘরে ফেরার সময় যেমন বড় ধরনের কোনো বিড়ম্বনা বা দুর্ভোগ হয়নি, আমরা আশা করব, কর্মস্থলে ফেরার সময়ও সেই পরিস্থিতি বজায় থাকবে।

ঈদ উদযাপন শেষে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। গতকাল থেকে সরকারি অফিস আদালত ব্যাংক বিমা খুলেছে। ঈদে ঘরে ফেরার ধকল গত কয়েক বছরে কমছে বলা যায়। যাত্রীসাধারণ মোটামুটি নির্বিঘ্নে ই ঘরে ফিরেছেন। তারপরও ঈদকে কেন্দ্র করে দুর্ঘটনা কম নয়। ঈদের আগে-পরে সড়কপথে কয়েকটি দুর্ঘটনায় অন্তত ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক। নীলফামারী, সাভার, নরসিংদী, চট্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ, মাগুরা এলাকায় এ সব সড়ক দুর্ঘনার ঘটনা ঘটে। নৌপথে বাড়তি সতর্কতার কারণে এ বছর দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। কোনো লঞ্চ কিংবা নৌযানে যাতে বাড়তি যাত্রী নেয়া না হয় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজর রাখার চেষ্টা করেছে। রেলপথে ঠাসা যাত্রী নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ট্রেন চলাচল করলেও কোনো ট্র্যাজেডির যে উদ্ভব ঘটেনি এটি একটি স্বস্তিদায়ক দিক।

বছরে দুটি ঈদ মুসলমানদের জীবনে সবচেয়ে বড় উৎসব। কর্মসংস্থানের প্রয়োজনে যে যেখানেই থাকুক না কেন, দুটি ঈদে অন্তত তারা নিজ নিজ পরিবার ও স্বজনদের কাছে ফিরে যায়। বরাবরের মতো এবার ঈদযাত্রায় টিকেটের ভোগান্তি থাকলেও পথে যানজট কম ছিল। উৎসবকে কেন্দ্র করে বাড়তি মানুষের চাপ অনেকটাই পরিকল্পিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপরও দুর্ঘটনা রোধ করা যায়নি। ঈদের পরদিন সৈয়দপুর-নীলফামারী সড়কে পিকআপ ভ্যানকে বাসের ধাক্কায় নয় জন নিহত হয়েছেন। এতে কমপক্ষে ১৪ জন আহত হয়েছেন। একইদিন কিশোরগঞ্জে একজন, সাভারের আশুলিয়ায় একজন নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার নরসিংদীতে এনা বাসের ধাক্কায় এক রিকশাচালক নিহত হয়েছেন। একই দিন চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বাসের ধাক্কায় এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া মাগুরা সদর উপজেলায় বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন বাবা ও মেয়ে। প্রতি বছরই ঈদযাত্রাকে নিরাপদ ও নির্বিঘœ করতে সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নানা পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা এবং আশ্বাস-প্রতিশ্রæতি দেন। এবারো দিয়েছেন। কিন্তু দুর্ভোগ কমাতে পারলেও দুর্ঘটনা পিছু ছাড়েনি। ঈদের পরদিন ফাঁকা সড়কে বেপরোয়া গতিতে যান চালানোর পরিণামে দেশের নানা স্থানে অনাকাক্সিক্ষত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এ সব দুর্ঘটনা ঈদের আনন্দে সংশ্লিষ্টদের জন্য কেবল অমোচনীয় বিষাদই শুধু বয়ে আনেনি; হতাহতদের স্বজনের আহাজারি অন্যদের আনন্দও ¤øান করে দিয়েছে। এ কথা ঠিক যে, মৃত্যু মানুষের স্বাভাবিক নিয়তি। কিন্তু দুর্ঘটনায় মৃত্যু কারো কাম্য নয়। দুর্ঘটনায় মৃত্যু থেকে মানুষকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ার দায় সংশ্লিষ্টদের এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা মনে করি, দেশের বিস্তৃত সড়কপথকে নিরাপদ করে মৃত্যুর মিছিল থামাতে হলে সার্বিক সতর্কতা ও নজরদারি নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলোও যেহেতু চিহ্নিত, সেহেতু সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া। রবিবার থেকে মানুষ কর্মস্থলে ফেরা শুরু করেছে। এই সময়ে বিভিন্ন পথে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। মঙ্গল ও বুধবার থেকে ট্রেন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে ফিরতি মানুষের ভিড় বাড়বে। চলবে আগামী কয়েক দিন পর্যন্ত। এই সময়টা বিশেষ নজরদারি দরকার। ঘরে ফেরার সময় যেমন বড় ধরনের কোনো বিড়ম্বনা বা দুর্ভোগ হয়নি, আমরা আশা করব, কর্মস্থলে ফেরার সময়ও সেই পরিস্থিতি বজায় থাকবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App