×

অর্থনীতি

সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষার প্রয়াস

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০১৮, ১১:৩৮ এএম

শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের পথে ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ শিরোনামে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছিল ২০১৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর। সুশাসন, গণতন্ত্র ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণকে অগ্রাধিকার দিয়ে ঘোষিত ইশতেহারে স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশের, সংসদ সদস্যদের জবাবদিহি নিশ্চিতের, ফোর-জি চালু, দুর্নীতি দমন কমিশনের ক্ষমতা-দক্ষতা বাড়িয়ে এর কার্যকারিতা বাড়ানো, প্রভাবমুক্ত প্রশাসন গঠনের এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন কমিশনকে সংহত করার। সেই সঙ্গে ছিল আগের মেয়াদে ঘোষিত ইশতেহার ‘দিনবদলের সনদে’র অসমাপ্ত কাজ শেষ করার প্রতিশ্রæতি। জাতীয় সংসদে গতকাল বৃহস্পতিবার ঘোষিত আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো দৃশ্যমানরূপে বাস্তবায়নের প্রয়াস খুবই স্পষ্ট। রূপকল্প ২০৪১-কে টার্গেটে রেখে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ সময় ক্ষমতাসীন দলের ভিশন বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দল, মত, হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে সবাই মিলে সে পথ ধরে সামনে এগিয়ে চলার দিন এসেছে। আসুন, আমরা প্রস্তুতি নিই ২০৪১ সালের সমৃদ্ধ, উন্নত, সুখী ও শান্তিময় বাংলাদেশের জন্য। এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৪ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। গত বছর যা ছিল ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এ মেয়াদে ৫ বছর শেষে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার কতটুকু বাস্তবায়ন হলো, জানতে চাইলে দলটির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খান ভোরের কাগজকে বলেন, বড় বড় স্বপ্ন দেখতে হলে, বাজেটের আকারও বড় করতে হয়, যা বিগত ৫টি বাজেটে লক্ষণীয়। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যা ছিল, এসব বাজেটের মাধ্যমে প্রায় ৯০ শতাংশ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। অনেক বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কয়েকটি বড় প্রকল্প যেমন পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল নির্মাণ, যা এখনো বাস্তবায়নাধীন। এসব কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য এ বাজেটেও বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সভাপতিমন্ডলীর আরেক সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যে ইশতেহার ঘোষণা করেছে। তার প্রায় সবগুলোরই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কিছু কিছু বাকি আছে। তবে সেগুলো চলমান। ইশতেহারে ক্ষুধা ও দারিদ্র্র্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের কথা বলা হয়েছে। আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। দেশে এখন আর গরিব মানুষ নেই, অর্থাৎ মানুষ তিন বেলা খেতে পারছে। কোনো হাহাকার নেই। চিকিৎসার অভাব নেই। শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর হার বেড়েছে। যাদের ঘরবাড়ি নেই, তাদের সেটা নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে। ইন্টারনেট সেবা ফোর-জি ইতোমধ্যে চালু করা হয়েছে। সংসদ সদস্যদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হয়েছে। তাদের সম্পদের আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশন ও দুদকে দাখিল করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এখন অনেক শক্তিশালী। সরকারি দলের এমপি-মন্ত্রীরাও ছাড় পাচ্ছেন না। তাদেরও আইনের আওয়তায় আনা হচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হচ্ছে, আইন অনুযায়ী দুদক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। মোট কথা, অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় দুদক এখন অনেক বেশি সক্রিয়। প্রতিষ্ঠানটি এখন স্বাধীনভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ড. আবদুর রাজ্জাক আরো বলেন, আমরা সুশাসন নিশ্চিত করতে কাজ করছি। গণতান্ত্রিক ধারাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিচ্ছি। আমাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও সুশাসন। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার এক্ষেত্রে ব্যাপক কাজ করেছে। সুশাসন নিশ্চিতে বর্তমান সরকার দুই দফা উপজেলা নির্বাচন দিয়েছে। জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। একাধিক পৌরসভাকে সিটি করপোরেশন অর্থাৎ মহানগরীর মর্যাদা দেয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজ হয়েছে। এক্ষেত্রে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। আওয়ামী লীগের এই নীতিনির্ধারক বলেন, ইশতেহার অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনকে অনেক বেশি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী ও স্বাধীন হয়েছে। রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠন করে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। তারা নির্বাচন ভালোভাবে পরিচালনা করছেন। তিনি আরো বলেন, এদেশের জন্য ভালো যা কিছু করেছেন, শেখ হাসিনাই করেছেন। অন্য সরকারগুলো শুধু নিজেদের উন্নয়নের কথা ভেবেছে। যার জন্যই বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে ছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার তা থেকে বেরিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোলমডেল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App