×

অর্থনীতি

মোবাইল ফোন ও তামাক ছাড়া করপোরেট ট্যাক্স কমছে

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০১৮, ০৬:২৫ পিএম

মোবাইল ফোন ও তামাক ছাড়া করপোরেট ট্যাক্স কমছে
আগামী ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেটে করপোরেট ট্যাক্সে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। যেসব খাতে বর্তমানে ৪৫ শতাংশ করপোরেট ট্যাক্স বহাল আছে সেসব খাতে এ হার সাড়ে ৩৭ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তবে মোবাইল ফোন এবং তামাকজাত পণ্য উৎপাদন খাতে ৪৫ শতাংশই বহাল থাকবে। সোমবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আগামী ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, নতুন করে আর কোনো কর আরোপ করা হবে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে যে কর আছে তা পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। তবে সরকারের রাজস্ব আহরণের জন্য করের আওতা বাড়নোর চিন্তা করা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আগামী ৭ জুন দুপুর সাড়ে ১২টায় জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনে বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে টানা ১০ম বাজেট সংসদে উপস্থাপন করবেন। প্রতি অর্থবছরের বাজেটকে অর্থমন্ত্রী একটি শিরোনামে ভূষিত করে থাকেন। এবারের বাজেটের শিরোনাম হবে ‘সমৃদ্ধ আগামী : অগ্রযাত্রার বাংলাদেশ।’ এর আগে সকাল ১০টায় কেবিনেট বৈঠক হবে। সেখানে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট পাশ করা হবে। রোজার দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় সফরে বিদেশ যাওয়ার কর্মসূচি থাকায় খুব সংক্ষিপ্ত আকারে বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী। পরের দিন ৮ জুন দুপুর আড়াইটায় বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন হবে ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে। ২৮ জুন সংসদে অর্থবিল পাশ হবে। ৩০ জুন ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেট পাশ হবে। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী বলেন, আসন্ন বাজেটে নতুন করে কোনো কর আরোপ হবে না। এটাই আগামী ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেটে জনগণের জন্য সুখবর। কর না বাড়লে রাজস্ব বাড়বে কীভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের রাজস্ব আহরণকারী সংস্থা এনবিআরের লোকজনের মন-মানসিকতায় পরিবর্তন হয়েছে। একই সঙ্গে আইনের জটিলতা কমানো হয়েছে। তাই বেশি সংখ্যক মানুষ আয়কর দিচ্ছে। এ খাত থেকেই রাজস্ব বাড়বে। আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আমরা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলাম- আয়কর রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা হবে ১৫-২০ লাখ। কিন্তু সেটা ইতোমধ্যে ৩৩ লাখ ছাড়িয়েছে। এটা আগামীর জন্য খুব আশা জাগানিয়া বিষয়। আরো ভালো দিক হচ্ছে যে, নতুন করদাতাদের অধিকাংশই ইয়াং পিপল। তাদের মন-মানসিকতা অনেক ভালো। অর্থমন্ত্রী বলেন, বেশিরভাগ মানুষ ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল অনেকটা হয়রানি মনে করে। অনেকেই ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করত না। কিন্তু এখন এটা আর হয়রানি নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। এজন্য এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিনন্দন জানাই। কারণ, তারা তাদের মন-মানসিকতার অনেক পরিবর্তন করেছেন। তাছাড়া হয়রানি কমানোর জন্য কিছু আইন-কানুনও পরিবর্তন করা হয়েছে। ‘আগের ২০-২৫ বছরের হিসাব-নিকাশ এখন তিন বছরে নামিয়ে আনা হয়েছে। এতে করে জনগণ ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন,’ বলেন অর্থমন্ত্রী। আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ট্যাক্স অফিসের সংখ্যা অনেক বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে ২০০টি উপজেলা পর্যায়ে ট্যাক্স অফিস রয়েছে। আগামীতে প্রতিটি উপজেলায় ট্যাক্স অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা বাস্তবায়ন করতে হয়তো দু-তিন বছর সময় লাগবে। তিনি বলেন, কোন লেবেল থেকে আয়কর নেওয়া হবে সেটায় তেমন কোনো পরিবর্তন হবে না। গতবারও কোনো পরিবর্তন করিনি। এটা করার কোনো মানেই হয় না। অন্যান্য দেশে এটি ঘন ঘন পরিবর্তন করা হয় না। ভ্যাটের বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১২ সালের ভ্যাট আইন অনুযায়ী, আমাদের কমিটমেন্ট ছিল ভ্যাটের স্তর একটি করা। কিন্তু সেটা আমরা করতে পারিনি। তবে আমরা আগামী বাজেটে ভ্যাটের স্তর ৯টি থেকে কমিয়ে ৫টিতে নামিয়ে আনব। তবে আমাদের মূল টার্গেট হচ্ছে তিন স্তরে নামিয়ে আনা। ভ্যাটের সর্বোচ্চ হারটা ১৫ শতাংশই থাকবে। নিচেরগুলো পরিবর্তন করা হবে। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আয় সব থেকে বেশি হয় ভ্যাটের মাধ্যমে। আগামী বছরেও তাই থাকবে। দ্বিতীয় অবস্থানে আয়করকে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাজেটের আকার এখনই বলা সম্ভব নয়। আরো দু-একদিন পর এটা চূড়ান্ত হবে। তবে এটা ৪ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার আশপাশে থাকবে। আগামী বাজেটে কোন খাতকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে? এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এনার্জি খাতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App