×

অর্থনীতি

৩১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি খাতে বরাদ্দ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুন ২০১৮, ০৪:৩২ পিএম

৩১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি খাতে বরাদ্দ
আসন্ন ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকিতে মোট ৩১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। প্রস্তাবিত এই বরাদ্দ মোট দেশজ উৎপাদনের দেড় শতাংশ এবং চলতি অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১২ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছর বাজেটে ভর্তুকি খাতে মোট বরাদ্দ দেয়া হয় ২৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সূত্র জানায়, গত ৪ বছর ধরে ভর্তুকিতে বরাদ্দ কমে এলেও এবার বাড়ছে। অবশ্য এর যুক্তিসঙ্গত কারণও আছে। কিছু পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। তার মধ্যে বিদ্যুৎ ও গ্যাস অন্যতম। উৎপাদন বাড়ার কারণে বিদ্যুতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি লাগছে। এবার নতুন করে যোগ হয়েছে এলএনজি। এলএনজি অনেক বেশি দামে আমদানি করা হচ্ছে। সেই দামে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করা সম্ভব হবে না। ফলে এখানে ভর্তুকি দিতে হবে। সূত্র জানায়, আগামী বাজেটে এলএনজির জন্য আড়াই থেকে তিন হাজার কোটি টাকা পৃথক বরাদ্দ থাকছে। এ ছাড়া এলএনজির দাম সহনীয় রাখতে আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) প্রত্যাহার করা হতে পারে। শেষ পর্যন্ত বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা ভর্তুকি বরাদ্দের প্রস্তাব থাকছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, ভর্তুকি হচ্ছে এক ধরনের অনুৎপাদনশীল খাত। অর্থনীতির অদক্ষতার কারণেই ভর্তুকি দিতে হয়। এটি যত বেশি হবে, সরকারের ওপর তত আর্থিক চাপ বাড়বে। তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, অবশ্যই ভর্তুকির দরকার রয়েছে। তবে তার আগে টার্গেট গ্রুপ ঠিক করতে হবে সরকারকে। জানা যায়, রপ্তানি উৎসাহিত করতে প্রণোদনা দেয়ার বিষয়ে বেশি বরাদ্দের চাপ রয়েছে এবার। চলতি অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। জানা যায়, গত সপ্তাহে প্রণোদনার বিষয়ে সচিবালয়ে অর্থ সচিবের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রপ্তানিতে প্রণোদনা আরো বেশি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আসন্ন বাজেটে রপ্তানিতে প্রণোদনা আগের চেয়ে ৫০০ কোটি বাড়িয়ে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে। কৃষিতেও ভর্তুকির চাহিদা বাড়ছে। চলতি বাজেটে কৃষি উপকরণ (সার) আমদানিতে ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে এখন জ্বালানি পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। তেলের দাম বাড়লে সারের দামও বাড়ে। সেজন্য কৃষিতে আরো বেশি ভর্তুকি দিতে হবে। জানা যায়, আসন্ন বাজেটে কৃষিতে বর্তমানের চেয়ে আরো ৫০০ কোটি বাড়িয়ে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা হচ্ছে। জানা যায়, বর্তমানে ৬-৭টি খাতে ভর্তুকি দেয়া হয়। এর মধ্যে বিদ্যুৎ, কৃষি, রপ্তানি, খাদ্য, পাট ও পাটজাতপণ্য উল্লেখযোগ্য। এর বাইরে আরো কিছু খাতে ভর্তুকি দেয়া হয়। গরিব মানুষকে সাশ্রয়ী দামে খাওয়ানোর জন্য খোলা বাজারে (ওএমএস) চাল বিক্রি করে সরকার। এ জন্য চাল ও আটায় ভর্তুকি দেয়া হয়। চলতি বাজেটে এ খাতে ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। আগামী বাজেটেও একই পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে আগের মতো ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য খাতে দেড় হাজার কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে আসন্ন বাজেটে ভর্তুকি বাবদ ৩১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App