×

অর্থনীতি

নানা অব্যবস্থাপনায় কমছে বাজেট বাস্তবায়নের হার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ মে ২০১৮, ০২:০১ পিএম

নানা অব্যবস্থাপনায় কমছে বাজেট বাস্তবায়নের হার
প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ, প্রকিউরমেন্ট পদ্ধতির ধীরগতি, প্রকল্প পরিচালক নিয়োগে দীর্ঘসূত্রিতাসহ নানা ধরনের অব্যবস্থাপনার কারণে গত তিন অর্থবছর ধরেই ক্রমেই কমছে বাজেট বাস্তবায়নের হার। সর্বশেষ অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে ৮০ শতাংশে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূূত্র জানায়, বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা বিবেচনায় না নেয়ায় ২০১২ সাল থেকে বাজেটের আকার বাড়লেও বাস্তবায়নের হার ক্রমেই কমছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নের হার ৯৩ শতাংশ ছিল। গত কয়েক বছরে কমে তা দাঁড়িয়েছে ৮০ শতাংশের নিচে। প্রতিবছর বাজেটে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকার বেশকিছু প্রকল্প হাতে নেয়। এ ছাড়া অনেক প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। এমনও অনেক প্রকল্প রয়েছে, ওয়ার্ক অর্ডার পাওয়ার পরও কাজে হাত দেয় না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগে জটিলতা, প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণসহ নানা ধরনের অব্যবস্থাপনার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন হয় না। বছরের শেষ দিকে এসে প্রকল্প বাস্তবায়নের হিড়িক পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে অর্থবছর শেষ হলেও অর্থ রয়েই যায়, ব্যয় করা হয় না। তবে এবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাজেট বাস্তবায়নের হার বাড়াতে বাজেট পাস হওয়ার পর থেকে প্রতিটি প্রকল্পে অর্থ ব্যয় করতে পারবেন বলে ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন। আর বাজেট বাস্তবায়নের হার কমে যাওয়াকে দুঃখজনক বলে জানিয়েছেন তিনি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাস্তবায়নের সক্ষমতা বিবেচনায় না নিয়ে বাজেটে উচ্চাবিলাসী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে। আমাদের দেশে বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় উচ্চাকাক্সক্ষার ভিত্তিতে, বাস্তবতার ভিত্তিতে নয়। তাদের প্রশ্ন, শুধু ঘোষণা দিলেই কি প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া অর্থ ব্যয় করা যাবে? প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ফার্ম নিয়োগ দেয়া থেকে শুরু করে পরিচালক নিয়োগ প্রক্রিয়া, প্রকিউরমেন্ট পলিসি এসব কিছু নির্ধারণ না করে কিভাবে প্রকল্পের অর্থ ব্যয় হবে? এখন পর্যন্ত অর্থমন্ত্রী প্রকল্প পরিচালকদের কোনো তালিকা প্রস্তুত করেননি। তাহলে বাজেট পাসের পর কিভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব? তবে আগামী অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় এসব বিষয়ের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকবে বলে আশা প্রকাশ করছেন অর্থনীতিবিদরা। এর আগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বাজেট বাস্তবায়নের হার ক্রমেই কমে যাওয়া অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক। বাজেট উচ্চাভিলাসী নয়। তবে বাজেটের অর্থ খরচ করতে না পারার কারণে এক অর্থে একে উচ্চাভিলাসী বলা যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ব ব্যাংকে প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ থেকে শুরু করে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করার ক্ষেত্রে নানা ধরনের জঠিলতা রয়েছে। এ ছাড়া এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা ওয়ার্ক অর্ডার পাওয়ার পরও কাজ শুরু করেনি। তাই গত কয়েক বছর ধরে বাজেট বাস্তবায়নের হার ক্রমেই কমছে। তবে এবারের বাজেটে এসব বিষয়ে সংস্কার আনা প্রয়োজন। আশা করি আগামী বাজেট বক্তৃতায় এর সুস্পষ্ট পদক্ষেপ থাকবে। এর আগে ভোরের কাগজের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে সাধারণত বাস্তবিক দিক বিবেচনায় না নিয়েই বাজেটে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এতে প্রতিবছরই বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা কাটছাঁট করতে হয়। কারণ গত কয়েক বছর ধরে রাজস্ব আদায়ের হার ২২ থেকে ২৫ শতাংশ হলেও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩৫ শতাংশ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App