×

মুক্তচিন্তা

ঈদে ঘুরমুখো মানুষের দুর্ভোগের শঙ্কা

Icon

কাগজ অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ মে ২০১৮, ০৯:১৫ পিএম

সারাদেশে মহাসড়কে বেহাল দশায় সড়কপথের যাত্রীরা রেলের দিকে ঝুঁকছে। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে এই চাপ আরো বাড়বে। রেলকে আধুনিক করা হচ্ছে। কিন্তু দক্ষ লোকবল না থাকলে তা সচল রাখা কঠিন হবে। বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে রেল যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করতে পারে। এই ক্ষেত্র থেকে দুর্নীতি ও অব্যবস্থার অবসানের লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

দক্ষ জনবল সংকটের কারণে যাত্রীদের কাক্সিক্ষত সেবা দিতে পারছে না রেলওয়ে। গত কয়েক বছরে নানা উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হলেও লোকবল সংকটে যাত্রীরা সেভাবে সেবা পাচ্ছেন না। আসছে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যাত্রীসেবা বাড়াতে অতিরিক্ত প্রায় ২০০ বগি সংযুক্তির চিন্তায় রয়েছে রেলওয়ে। সেই সঙ্গে ২০-২৫টি ইঞ্জিনও প্রস্তুত রাখতে রেলওয়ের ৩টি ওয়ার্কশপকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে লোকবল সংকট ও অর্থ সংকটে যথাসময়ে বগি মেরামতের কাজ শেষ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এতে করে ঈদে ঘুরমুখো মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। ঈদের আগে এমন পরিস্থিতি কোনোভাবেই কাম্য নয়।

১ জুন থেকে ট্রেনের আগাম টিকেট বিক্রি শুরু হচ্ছে। এই সময়কে কেন্দ্র করে সৈয়দপুর ওয়ার্কশপে জোর কদমে চলছে জোড়াতালির কাজ। কিন্তু কর্মী সংকট, অপ্রতুল বাজেট ও পর্যাপ্ত যন্ত্রাংশ না থাকায় এ টার্গেট পূরণে হিমশিম খাচ্ছে ওয়ার্কশপগুলো। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা সূত্র জানায়, প্রতি মাসে এখানে ২৬টি যাত্রীবাহী কোচ ও ২৫টি ওয়াগন মেরামতের লক্ষ্যমাত্রা থাকে। প্রতি ঈদে যাত্রীসেবার বিষয়টি মাথায় রেখে কোচ মেরামতের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়। ওয়ার্কশপে প্রায় ১০০টি বগি প্রস্তুতের নির্দেশনা রয়েছে। তবে এখানে জনবল সংকট ও অর্থের অপ্রতুলতা রয়েছে। ৩ হাজার ১৭১ জন কর্মীর মধ্যে এখানে রয়েছে মাত্র ১ হাজার ১৮০ জন। এত অল্প কর্মী নিয়ে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। তা ছাড়া বাজেটও গত মার্চে শেষ হয়েছে। এখনো নতুন বরাদ্দ আসেনি। সে কারণে টার্গেট কতটা পূরণ হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। অভিযোগ আছে, রেলে যথাসময়ে নতুন লোক নিয়োগ না দিয়ে একটি কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। অবসরপ্রাপ্তদের যাতে চুক্তিতে নিয়োগ দেয়া হয় সেটাই এ সংকট সৃষ্টির উদ্দেশ্য। রেলে এ সংস্কৃতি চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এর পেছনে রয়েছে অবৈধ অর্থবাণিজ্য। এতে একদিকে রেলে নতুন দক্ষ লোক সৃষ্টি হচ্ছে না, অন্যদিকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রেলওয়ে। কারণ চুক্তিতে নিয়োগপ্রাপ্তদের নিয়মিতদের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ভাতা দিতে হয়। এভাবে রেলওয়ের লোকসানের বোঝা ক্রমেই বাড়ছে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক, এর ফলে উপেক্ষিত হচ্ছে জনস্বার্থ। সারাদেশে মহাসড়কে বেহাল দশায় সড়কপথের যাত্রীরা রেলের দিকে ঝুঁকছে। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে এই চাপ আরো বাড়বে। রেলকে আধুনিক করা হচ্ছে। কিন্তু দক্ষ লোকবল না থাকলে তা সচল রাখা কঠিন হবে। বর্তমান সরকার রেলের উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। রেলের উন্নয়নে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে। কতভাগ বাস্তবায়িত হচ্ছে তা দেখার বিষয়। বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে রেল যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করতে পারে। এই ক্ষেত্র থেকে দুর্নীতি ও অব্যবস্থার অবসানের লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App