×

জাতীয়

সারাদেশে ‌‌‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ১১

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ মে ২০১৮, ১১:০৫ এএম

ঢাকা, সাতক্ষীরা, কক্সবাজার, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, গাইবান্ধা, শেরপুর ও ঝিনাইদহে র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১১ জন নিহত হয়েছেন। র‌্যাব-পুলিশ বলছে, নিহত ১১ জনই মাদক বিক্রেতা। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের বিভিন্ন সময়ে এসব ঘটনা ঘটে। ঢাকা: তেজগাঁও বিজি প্রেস এলাকায় র‍্যাব-২-এর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কামরুল ইসলাম (৩৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। র‍্যাব বলছে, নিহত কামরুল মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর বাসা রাজধানীর মহাখালীর দক্ষিণপাড়ায়। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজান রাত দেড়টার দিকে কামরুলকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক কামরুলকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ব্যক্তির লাশ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রয়েছে। ময়মনসিংহ: দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে শহরের পুরোহিত পাড়া রেল কলোনি এলাকায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রাজন (৩০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমানের ভাষ্য, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রেল কলোনি এলাকায় ডিবি অভিযানে যায়। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছোড়ে। ডিবিও পাল্টা গুলি করে। এতে রাজন নিহত হন। রাজন ময়মনসিংহ শহরের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের একজন। তাঁর নামে ৮-৯টি মামলা রয়েছে। ডিবি বলছে, ঘটনাস্থল থেকে তিনটি গুলির খোসা, একটি চাইনিজ কুড়াল, একটি ধারালো হাঁসুয়া উদ্ধার করা হয়েছে। নেত্রকোণা : মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে নেত্রকোণায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তিন পুলিশ সদস্য। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে সদর উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের মনাং গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।নিহতদের নামপরিচয় জানা না গেলেও তারা মাদক চোরাকারবারে জড়িত বলে দাবি করছে পুলিশ। নিহত দুইজনের বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উদ্দিন খান জানান, মনাং গ্রামে কিছু মাদক কারবারির জড়ো হওয়ার খবরের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালাতে যায় পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক কারবারিরা পুলিশের উপর গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। দুই পক্ষে গোলাগুলির এক পর্যায়ে দুইজন আহত হন। পরে তাদের নেত্রকোণা সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ দুটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বন্দুকযুদ্ধের সময় পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। কুমিল্লা: কুমিল্লা বুড়িচংয়ে গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশের সাথে 'বন্দুকযুদ্ধে' কামাল ওরফে ফেন্সি কামাল নামে একজন নিহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত মাদক ব্যবসায়ী কামালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১২টি মাদক মামলা রয়েছে। এসময় গ্রেফতার হয়েছেন আরো দুই মাদক ব্যবসায়ী। আহত হয়েছেন- গোয়েন্দা পুলিশের তিন সদস্য। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি ও ৫০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোজ কুমার দে জানান, বৃহস্পতি রাত ১২ টার দিকে মাদক বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশের একটি দল বুড়িচং উপজেলার মহিষমাড়ায় এলাকায় মাদকের চালান দেখতে পেয়ে অভিযান চালালে  পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদকব্যসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে উভয় পক্ষের গোলাগুলিতে মাদক ব্যসায়ী কামাল গুরুতর আহত হয়। এসময় গ্রেফতার হয় তার দুই সহযোগী হানিফ এবং ইলিয়াছ। ওসি জানান, গুরুতর আহত কামালকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।নিহত কামাল আদর্শ সদর উপজেলার রাজমঙ্গলপুর গ্রামের হিরন মিয়ার ছেলে। আহত গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা হলেন- এসআই নন্দন চন্দ্র সরকার, এসআই সাহাবুল ইসলাম ও কনস্টেবল মো. সুমন মিয়া। কক্সবাজার: রাতে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার পাহাড়তলী এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে মোস্তাক আহমদ নামে এক মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে দু’টি এলজি, পাঁচ রাউন্ড কার্তুজ ও এক হাজার ইয়াবা জব্দ করা হয়। এছাড়া কক্সবাজারের রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের দুই নম্বর ব্রিজ এলাকায় দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রুপের মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ উখিয়া-টেকনাফ আসনের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির বেয়াই ও টেকনাফের ইয়াবা ডন আকতার কামাল (৪১) নিহত হয়েছেন। ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে পুলিশের সাথে 'বন্দুকযুদ্ধে' শামীম সরদার ওরফে মামুন (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। বৃহষ্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার মোবারকগঞ্জ চিনিকলের উত্তর পার্শ্বে আড়পাড়া ওয়াপদা মাঠে এ ঘটনা ঘটে।নিহত শামীম দক্ষিণ আড়পাড়া গ্রামের মোমিনুর রহমান ওরফে মোমিন সর্দারের ছেলে। তার স্থায়ী বাড়ি ঢাকা জেলায় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও মাদক দ্রব্য উদ্ধার হয়েছে। 'বন্দুকযুদ্ধের' ঘটনায় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে পুলিশের দাবি। কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান খান জানান, পুলিশ গোপন সংবাদে জানতে পারে যে, মোবারকগঞ্জ চিনিকলের উত্তর পার্শ্বে ওয়াপদা মাঠের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে মাদকের লেনদেন হচ্ছে। খবর পেয়ে মাদক বিরোধী অভিযান দল ওই স্থানে পৌঁছায়। তিনি জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। স্থানীয়রা নিহত ব্যক্তিকে মাদক সম্রাট শামীম সর্দার বলে সনাক্ত করেন। পুলিশ দাবি করেছে, গোলাগুলির ঘটনায় নিজেদের গুলিতেই মাদক ব্যবসায়ী শামীম নিহত হয়েছেন। এছাড়া মাদক ব্যবসায়ীদের ছোড়া গুলিতে এস আই অমিত কুমার, এএসআই শামীম, কনষ্টেবল রতন ও নাজিম আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি, ৪৮০ পিস ইয়াবা ও ১৭ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করেছে। সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় কলারোয়ায় মাদক ভাগাভাগি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে 'বন্দুকযুদ্ধে' ইউনুস আলী দালাল (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাত দুইটার দিকে উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ওয়ান শ্যুটার গান, দুই রাউন্ড গুলি ও ৭০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে। নিহত ইউনুস আলী দালাল কলারোয়া উপজেলার দক্ষিণ ভাদিয়ালি গ্রামের আব্দুল্লাহ দালালের ছেলে। কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, রাত দুইটার দিকে সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর-বড়ালি পাকা রাস্তার পাশে সীমান্ত এলাকায় দুইদল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে গোলাগুলি হচ্ছে বলে তারা খবর পান। তাৎক্ষণিক পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা শর্টগানের গুলি ছোড়ে। এতে দুইপক্ষই ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ওয়ান শুটার গান, দুই রাউন্ড গুলি ও ৭০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার করে। তিনি আরও জানান, কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ইউনুস আলী দালাল একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তার নামে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। লাশ উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। জন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এদরে সবাই নিহত হয়েছেন আইনশৃঙখলা বাহিনীর সঙ্গে ‌‌‘বন্দুকযুদ্ধে’। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের বিভিন্ন সময়ে এসব ঘটনা ঘটে। গাইবান্ধা: ভোরে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার পুলবন্দি ফলিয়া ব্রিজ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জুয়েল মিয়া নামে এক মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। গাইবান্ধার পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। শেরপুর: শেরপুরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালু ডাকাত নিহত হয়েছেন। শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আমিনুল ইসলাম জানান, মরদেহ ময়নাতদেন্তর জন্য শেরপুর সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App