×

পুরনো খবর

গুলশানে ভিআইপি নিয়ে ব্যস্ত পুলিশ, বঞ্চিত আমজনতা

Icon

ইমরান রহমান

প্রকাশ: ২৩ মে ২০১৮, ০২:০৯ পিএম

গুলশানে ভিআইপি নিয়ে ব্যস্ত পুলিশ, বঞ্চিত আমজনতা
গুলশান শুধু রাজধানীর অন্যতম অভিজাত এলাকাই নয়, প্রধান কূটনৈতিক পাড়াও। ফলে বেশির-ভাগ সময় ভিআইপিদের নিরাপত্তায় ব্যস্ত থাকতে হয় এ থানার পুলিশকে। তা ছাড়া হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তা জোরদারেও দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে তাদের। তদন্ত কর্মকর্তারা ভিআইপি নিরাপত্তা ও বিভিন্ন মোবাইল টিমে ব্যস্ত থাকায় সাধারণ মামলার তদন্তও সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে না। ফলে কাক্সিক্ষত পুলিশিসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে আমজনতা। অন্যদিকে গুলশান থানা একটি মডেল থানা হলেও থানার কর্মকর্তারা বলছেন, অফিসিয়ালি এ ধরনের কোনো নির্দেশনা নেই। ফলে থানার বাইরের সাইন বোর্ডেও লেখা নেই ‘মডেল’ শব্দটি। ২টি গাড়িতে ‘মডেল’ শব্দটি লেখা থাকলেও থানার বেশির ভাগ গাড়িতে লেখা রয়েছেÑ গুলশান থানা। ফলে জনসাধারণ বিভ্রান্তিতে পড়ছেনÑ এটা কি সত্যি মডেল থানা? এখানে গেলে পর্যাপ্ত সেবা পাবতো? এখানেই শেষ নয়, মনোরম পরিবেশে গুলশান থানা স্থাপন করা হলেও এখানে অভ্যাগতদের জন্য নেই কোনো টয়লেটের ব্যবস্থা। এমনকি মডেল থানাগুলোতে ২৪ ঘণ্টা পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকার কথা থাকলেও সেখানে ঘাটতি রয়েছে। এ ছাড়াও জনবল সংকটের কারণেই সব মামলা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা যাচ্ছে না বলে জানা গেছে। থানায় কর্তব্যরত এক কর্মকর্তা এসব অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, প্রায় সব কয়টি দূতাবাস গুলশান থানা এলাকায়। দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তায় মূলত ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগ কাজ করে। তারপরেও ঝুঁকি এড়াতে থানা পুলিশকে সতর্ক থাকতে হয়। এ ছাড়া সব থানাতেই কমন কিছু সমস্যা থাকে। এই থানাতেও আছে। পর্যায়ক্রমে সব সমস্যাই ঠিক হয়ে যাবে। সরেজমিন গত ২১ মে গুলশান থানায় গিয়ে দেখা গেছে, বাইরে থেকে ভেতরে ঢুকতে হলে খাতায় এন্ট্রি করে ঢুকতে হয়। ফলে সেখানে কোনো দালালের উৎপাত নেই। থানার পরিবেশ মনোরম হলেও সেখানে দর্শনার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত বসার স্থান রাখা হয়নি। মহিলা ও শিশু ডেস্কের ব্যানার থাকলেও বাস্তবে কোনো ডেস্ক নেই। এমনকি সারাদিনে কোনো মহিলা পুলিশ অফিসারও চোখে পড়েনি। মামলা ও জিডি করতে একাধিক লোক থানায় এলেও বসার জায়গার অভাবে তাদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর ১৮ ও ১৯নং ওয়ার্ড নিয়ে গুলশান মডেল থানা গঠিত। এর মধ্যে রয়েছে গুলশান ১ ও ২ নম্বর, কালাচাঁদপুর, শাহজাদপুর ও নর্দা এলাকা। বর্তমানে এ থানায় ওসিসহ দুই পরিদর্শক, ৪৮ জন এসআই, ৫৫ জন এএসআইসহ প্রায় শতাধিক কনস্টেবল রয়েছে। চাহিদার তুলনায় এ জনবল পর্যাপ্ত নয়। গুলশান মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. সালাউদ্দিন মিয়া ভোরের কাগজকে বলেন, যে কোনো থানার তুলনায় গুলশান থানার পরিবেশ ভালো। আবাসিক এলাকা হওয়ায় এখানে কোনো হকার, ভিক্ষুক নেই। ফলে সাধারণত ছোটখাট ঝামেলা তেমন হয় না। তবে সব কাজের মধ্যেই কিছু কমতি থেকে যায়। কিন্তু আমাদের তেমন কোনো কমতি নেই। আমরা নাগরিকদের সর্বোচ্চ সেবাটাই দেয়ার চেষ্টা করছি। জনগণও আমাদের সেবাতে খুশি। কোন ধরনের অপরাধ বেশি হয়? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আবাসিক এলাকা হওয়ায় এখানে চুরি এবং ব্যবসায়িক লেনদেন জাতীয় অভিযোগ বেশি আসে। আমরা চেষ্টা করি আমাদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে সবাইকে ভালো রাখতে। থানার ব্যানারে ‘মডেল’ লেখা নেই কেন জানতে চাইলে বলেন, মডেল হিসেবে আমাদের অফিসিয়ালি কোনো নির্দেশনা নেই। তাই মডেল লেখা হয়নি। গাড়িতে কেন লেখা হয়েছে? জানতে চাইলে বলেন, ওটা ভুল করে হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App