×

সম্পাদকীয়

সুপরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত জরুরি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ মে ২০১৮, ০৬:০২ পিএম

গ্যাসের চাহিদা মেটানো ও গ্যাসের সংকট উত্তরণে নতুন নতুন কূপ অনুসন্ধান ও খনন করে গ্যাসের মজুদ বাড়াতে হবে। গ্যাসের অপচয় রোধ করতে হবে। গ্যাসের সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে হবে। সর্বোপরি গ্যাসের সাশ্রয়ী ও সুপরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

প্রতি বছরের মতো এবারো রমজানে রাজধানীতে দেখা দিয়েছে গ্যাস সংকট। এতে করে বাসাবাড়িতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গৃহিণীদের। রমজানের প্রথম দিন থেকেই রাজধানীর অধিকাংশ এলাকাতে বিকেলে ইফতারি তৈরির সময় এবং গভীর রাতে সেহরির সময় গ্যাস থাকছে না। এই অবস্থায় সারাদিন রোজা রেখে ইফতারি এবং ভোররাতে সেহরি তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়ছে। ঢাকায় গ্যাস বিতরণের দায়িত্বে থাকা তিতাস গ্যাস কোম্পানি বলছে, ঘাটতির কারণে বাসা-বাড়িতে সংকট দেখা দিয়েছে। সামগ্রিক এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।

রাজধানীতে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ২০০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি। সেখানে তিতাস গড়ে ১৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাচ্ছে। ফলে প্রতিদিন ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ঘাটতি থাকছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় এমনিতেই সারা বছর গ্যাসের সংকট থাকে। শীতে এই সংকট বেড়ে যায়। গরমের সময় সমস্যা অতটা বেশি থাকে না। তবে এবার রমজানে গ্যাসের সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, হাতিরপুল ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, কাফরুল, পশ্চিম আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, আদাবর, পশ্চিম ধানমণ্ডি, লালবাগ, সোবহানবাগ, পুরান ঢাকার তাঁতিবাজার, শাঁখারীবাজার, কামরাঙ্গীরচর, উত্তরা, দক্ষিণখান, উত্তরখান, যাত্রাবাড়ীর একাংশ, দক্ষিণ বনশ্রী, রামপুরার শিমুলবাগ, আশীষ লেন ও উলন রোড এলাকার বিভিন্ন স্থানে গ্যাস সংকট তীব্র রূপ নিয়েছে। এসব এলাকার কোথাও কোথাও সারাদিন চুলা জ্বলে না। আসে সন্ধ্যার পর। কিন্তু তাও ১/২ ঘণ্টার জন্য। এটা সত্যি রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকায়ই প্রায় সারা বছর আবাসিক সংযোগের পাইপলাইনে গ্যাসের স্বাভাবিক প্রবাহ থাকে। আর নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় সংকট লেগেই থাকছে বছরের পর বছর। গ্যাসের মজুদ সংকটের চেয়ে এ ক্ষেত্রে সঞ্চালনগত সমস্যাই বেশি দায়ী। দেখা গেছে, একটা সময় নির্দিষ্ট সংখ্যক গ্রাহকের কথা মাথায় রেখে এক ধরনের পাইপ বসানো হয়েছে, সময়ের ব্যবধানে ওই এলাকার গ্রাহক বেড়েছে ১০ থেকে ২০ গুণ। ফলে আগের সেই সংকীর্ণ পাইপলাইন দিয়ে ক্রমবর্ধমান গ্রাহকের গ্যাসের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব নিয়ে লেখালেখিও সব সময়ই হচ্ছে। তারপরও কেন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না তা আমাদের বোধগম্য নয়।

বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের গ্যাস ব্যবহার নিয়ে নতুন করে ভাবার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যেমন পাইপলাইনে সরবরাহকৃত গ্যাসের প্রচুর অপচয় ঘটে। এই অপচয় ঠেকাতে মিটার সিস্টেম চালু করা বা এরকম কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে না। পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের বিকল্প হিসেবে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার সুলভ ও সহজলভ্য করার কথা অনেকদিন থেকে বলা হলেও তা হচ্ছে না। পরিবহন খাতে অবাধে সিএনজির ব্যবহার চলছে। এটা নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগ নেই। গ্যাসের চাহিদা মেটানো ও গ্যাসের সংকট উত্তরণে নতুন নতুন ক‚প অনুসন্ধান ও খনন করে গ্যাসের মজুদ বাড়াতে হবে। গ্যাসের অপচয় রোধ করতে হবে। গ্যাসের সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে হবে। সর্বোপরি গ্যাসের সাশ্রয়ী ও সুপরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App