×

অর্থনীতি

বিক্রি হচ্ছে মানহীন পণ্য : প্রতিরোধে নেই পদক্ষেপ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ মে ২০১৮, ১২:৩৮ পিএম

বিক্রি হচ্ছে মানহীন পণ্য : প্রতিরোধে নেই পদক্ষেপ
বাজারে দেদার বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় মানহীন ঘোষিত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। এমনকি পণ্যগুলোর মানহীনতা সম্পর্কে ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ কিছু জানে না। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের মোদি দোকানির সঙ্গে কথা বলে এসব জানা গেছে। এ পরিস্থিতিতে ক্রেতা স্বার্থরক্ষায় মানহীন পণ্য উৎপাদক ও বাজারজাতকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিএসটিআই। শুধু কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে। নোটিসের জবারের অপেক্ষায় রয়েছে সরকারি এ সংস্থাটি। রমজান মাসে বেশি ব্যবহৃত খাদ্য ও পানীয়ের ১৫টি পণ্য এবং ২১ প্রতিষ্ঠানের তৈরি পণ্য বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) মানদÐে মানহীন। রমজান মাসে নির্ভেজাল খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইফতার ও সেহরিতে অধিক পরিমাণে ব্যবহৃত ২৪ ধরনের খাদ্যপণ্যের মোট ২৮৬টি নমুনা আগাম সংগ্রহ করে বিএসটিআইয়ের ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। ইতোমধ্যে ১৭৫টি নমুনার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৩৯টি নমুনা কৃতকার্য এবং ৩৬টি অকৃতকার্য হয়েছে। বাকি ১১১টি নমুনা পরীক্ষাধীন রয়েছে। বিএসটিআইয়ের মানদÐে মানহীন এসব পণ্যগুলো হচ্ছেÑ ড্যানিশ লাচ্ছা সেমাই, বগুড়া স্পেশাল ঘি, অরিজিনাল বাঘাবাড়ী ঘি, আফতাব মিল্ক, ঢাকা প্রাইম পাস্তুরিত দুধ, ফার্ম ফ্রেশ মিল্ক (পাস্তুরিত দুধ), ফার্টিফাইড সয়াবিন তেলÑ কোড-ডি (ড্রাম), ফার্টিফাইড সয়াবিন তেলÑ কোড-জি (ড্রাম), ফার্টিফাইড পাম অলিনÑ কোড-এইচ (ড্রাম), ফার্টিফাইড সয়াবিন তেলÑ কোড-আই (ড্রাম), ফার্টিফাইড পাম অলিনÑ কোড-জে (ড্রাম), ফার্টিফাইড সয়াবিন তেল- কোড-কে (ড্রাম), ফার্টিফাইড পাম অলিন-কোড-এল (ড্রাম), ফার্টিফাইড সয়াবিন তেল- কোড-এম (ড্রাম), ফার্টিফাইড সয়াবিন তেল- কোড-পি (ড্রাম)। সরেজমিন রাজধানীর শান্তিনগর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, আব্দুল হালিম নামের এক ক্রেতা এসে দোকানে পাস্তুরিত দুধ চাইলেন। সঙ্গে সঙ্গে দোকানি ফার্ম ফ্রেশের দুধের প্যাকেটটি হাতে ধরিয়ে দিলেন। ক্রেতা নিয়ে চলে গেলেন। এ সময় পাস্তুরিত দুধের বিক্রির বিষয়ে কথা হয় দোকানি আলমগীর হোসেনের। বিএসটিআই ফার্ম ফ্রেশের পাস্তুরিত দুধকে মানহীন ঘোষণার পরও বিক্রির কারণ সম্পর্কে তিনি জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। জানলে তিনি এমন দুধ বিক্রি করতেন না। বিএসটিআইয়ের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কিছুই জানানো হয়নি। রাজধানীর সেগুনবাগিচার আরেক খুচরা দোকানে বিক্রি হচ্ছে অরিজিনাল বাঘাবাড়ী গাওয়া ঘি। বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় মানহীন প্রমাণ করার পরও বিষয়টি জানেন না ক্রেতা ও বিক্রেতারা। এ বিষয়ে ক্রেতা জাভেদ আলী বলেন, আসলে ঢাকা শহরে তো বাছ-বিচার করে পণ্য কেনা যায় না। শুনেছি অরিজিনাল বাঘাবাড়ী ঘি সুস্বাদু তাই কিনলাম। তবে বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় এই ঘি যে মানহীন তা সরকারের পক্ষ থেকে ক্রেতাদের জানানো উচিত ছিল বলে তিনি মনে করেন। এ প্রসঙ্গে কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে যেসব পণ্য বিএসটিআইয়ের মানদÐে মানহীন বলা হয়েছে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু ঘোষণা দিলেই হবে না। এর প্রতিকারের ব্যবস্থা করাও সরকারের দায়িত্ব। এদিকে খুচরা বাজারে কিংবা মহল্লার দোকানে বিক্রি হচ্ছে মানহীন এসব পণ্য। কেউ বা জানেন না, আবার কেউ জানলেও এসব নিয়ে মাথা ঘামান না। মহল্লার দোকানদার এসব বিষয়ে সচেতন না থাকায় বিক্রি করছেন মানহীন এ পণ্যগুলো। এ পণ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে পাস্তুরিত দুধ, ঘি, ফার্টিফাইড অয়েল। তবে পাম অয়েল কিছুটা কম বিক্রি হচ্ছে। এসব পণ্য বিক্রি বা বাজার থেকে তুলে নেয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত না থাকায় ভুগতে হচ্ছে ক্রেতা এবং দোকানি উভয়কেই। মানহীন এসব পণ্যের বিষয়ে বিএসটিআইয়ের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এস এম ইসহাক আলী ভোরের কাগজকে বলেন, মানহীন ৩৬ পণ্যের তালিকা দেয়া হয়েছে। এসব কোম্পানিকে বিএসটিআই থেকে শোকজ করা হয়েছে। এর জবাব এলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App