×

অর্থনীতি

পতন টানা ১৩ দিন, সূচক বছরের সর্বনিম্ন

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ মে ২০১৮, ০৭:৫৮ পিএম

পতন টানা ১৩ দিন, সূচক বছরের সর্বনিম্ন
টানা ১২ কার্যদিবস পতনের পর রবিবারও ঢুকে দাঁড়াতে পারল না দেশের দুই পুঁজিবাজার। এর মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইসে মূল্য সূচক বছরের গত এক বছরের সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে গেছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের দুই পুঁজিবাজারেই সূচকের পাশাপাশি লেনদেন শেষ হয়েছে। দাম কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। ২০১০ সালের ধসের পর ২০১৭ সাল ছিল পুঁজিবাজারের ঘুরে দাঁড়ানোর বছর। কিন্তু চলতি বছরের শুরু থেকে আবার বাজারে দেখা দিয়েছে মন্দাভাব। গত মার্চ থেকে সেটি আরও প্রকট হয়। তবে গত ২৬ এপ্রিল থেকে বাজারে যে চিত্র দেখা গেছে, সেটি এর আগে কখনও দেখা যায়নি। সেদিন থেকে আজ অবধি টানা ১৩ কার্যদিবস পতন হলো পুঁজিবাজারে। এই কয়দিন সূচক ৪২৩ পয়েন্ট কমে নেমে এসেছে পাঁচ হাজার ৩৯০ পয়েন্টে নেমে এসেছে। ২০১৭ সালের ৩০ মে, সূচক ছিল পাঁচ হাজার ৩৭৩ পয়েন্ট। ২০১০ সালে টানা ১০ কার্যদিবসের পতন দেখার পর এই চিত্র আর দেখা যায়নি। বাজারের এই আচরণ ভালো ঠেকছে না বিনিয়োগকারীদের। আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে বাজার ভালো যাবে ভেবে গত বছর তেজী বাজারে যারা বিনিয়োগ করেছিলেন, তারা এখন বড় লোকসানে আছেন। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে বেসরকারি ব্যাংকের মূলধন অনেক বেশি। ব্যাংকগুলোর ২০১৭ সালে লভ্যাংশ কমেছে। কোনো কোনো ব্যাংক নগদ অর্থ জমা রেখে শুধু বোনাস শেয়ার ইস্যু করেছে। আবার গত বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় এবার প্রথম প্রান্তিকে বেশিরভাগ ব্যাংকের মুনাফা কমেছে। এতে ব্যাংক খাতের শেয়ারে বিক্রির চাপ বেড়ে গেছে। ফলে বাজারে দরপতনে বড় প্রভাব পড়েছে। ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তাক আহমেদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘শেয়ারবাজারে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর লভ্যাংশ ভালো না হওয়ায় বাজারে শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে গেছে। মূলত সে জন্যই বাজারে নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।’ এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-এসইসির এর আয়োজনে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা জনিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক থেকে পুঁজিবাজার থেকে টাকা তোলার পরামর্শ দেয়া হলেও বাজার দুর্বল বলে আক্ষেপ তার। আগামী অর্থ বছরের বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য নীতি সহায়তা থাকবে জানিয়ে বাজেটের পর বাজার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসার কথাও জানিয়েছেন মন্ত্রী। সূচকের পাশাপাশি কমেছে লেনদেন দিন শেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৫২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫৩৯০ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১২৬৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২০০৯ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৩৪টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫০টির, কমেছে ২৬১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টির। গত বৃহস্পতিবার ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৬৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ৫৪৪৩ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ১২৭৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ৩০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ২০২৫ পয়েন্টে। ডিএসইর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, আজ ডিএসইতে ৩৯৫ কোটি ৬৬ লাখটাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৯৭ কোটি ১৩ লাখটাকা কম। বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ৪৯২ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। ডিএসইতে আজ লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো: এডভেন্ট ফার্মা, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, রহিম টেক্সটাইল, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড, এসএমইএল আইবিবিএল শরিয়াহ্ ফান্ড, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, এইচ আর টেক্সটাইল এবং গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস। অপর দিকে আজচট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ১৬ কোটি ৮০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৬০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৬ হাজার ৬৪৩ পয়েন্টে। লেনদেন হওয়া ২১৭টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৪৩টির, কমেছে ১৫১টির এবং বদলায়নি ২৩টির শেয়ারের দর।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App