×

বিনোদন

থিয়েটার তো সব সময়ই চ্যালেঞ্জ নেয়ার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মে ২০১৮, ০১:০৫ পিএম

থিয়েটার তো সব সময়ই চ্যালেঞ্জ নেয়ার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগে লেকচারার হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেছেন চলতি বছরের মার্চ মাসে। এর আগে এই বিভাগ থেকেই নাট্যকলায় স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন তানভীর নাহিদ খান। এবার শিক্ষক হিসেবে তার নির্দেশনায় মঞ্চে আসছে নাটক ‘দ্য লোয়ার ডেপথস’। ম্যাক্সিম গোর্কির লেখা এই নাটকটি অনুবাদ করেছেন তানভীর মোকাম্মেল। আগামী ৭ থেকে ১১ মে টানা পাঁচদিন দুনিয়ার শ্রমজীবী, নিপীড়িত, বাস্তুহারা, সর্বহারা, রাষ্ট্রহারা মানুষের উদ্দেশে এই নাটকটির প্রদর্শনী হবে। নাটকের প্রদর্শনী শুরু হবে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায়। থিয়েটারের নানা প্রসঙ্গ নিয়ে ভোরের কাগজের মুখোমুখি হয়েছিলেন এই তরুণ নাট্য শিক্ষক। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হেমন্ত প্রাচ্য
থিয়েটারের সঙ্গে আপনার সম্পৃক্ততা কীভাবে? আমি যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি তখন চাঁদপুরে অনন্যা নাট্য গোষ্ঠীতে শুরু হয় থিয়েটার চর্চা। সেখান থেকেই থিয়েটারের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়। পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছি। ২০১৭ সালের শেষের দিকে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেই। ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেছি। আপনার নির্দেশনায় মঞ্চে আসছে ‘দ্য লোয়ার ডেপথস’। এই বিষয়ে জানতে চাই? ঢাবিতে শিক্ষক হিসেবে যুক্ত হওয়ার পর এটিই আমার প্রথম নির্দেশনা। নাটকটিতে অভিনয় করবেন ঢাবি থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের পঞ্চম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীরা। মূলত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার অংশ হিসেবে নাটকটি মঞ্চে আসছে। নির্দেশক হিসেবে আপনাকেও তো পরীক্ষা দিতে হচ্ছে? থিয়েটার তো সব সময়ই চ্যালেঞ্জ নেয়ার। আর নির্দেশক হিসেবে তো আমাকে চ্যালেঞ্জ নিতেই হবে। আমরা চেষ্টা করছি একটা ভালো নাটক মঞ্চে নিয়ে আসতে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা যেন এই নাটকের মাধ্যমে নিজের বোধটাকে জাগ্রত করতে পারে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নির্দেশক হিসেবে আমিও পরীক্ষার্থী। দর্শকই আমাদের পরীক্ষক। দর্শকের জন্য অপেক্ষায় থাকব। শিক্ষক হিসেবে প্রথম নির্দেশনা, এই নাটকটিই কেন বেছে নিলেন? আমার মনে হয়েছে পুরো বিশে^র সামাজিক-রাজনৈতিক বাস্তবতায় খুবই প্রাসঙ্গিক একটি নাটক ‘দ্য লোয়ার ডেপথস’। ম্যাক্সিম গোর্কির এই নাটকে শ্রমজীবী, নিপীড়িত, বাস্তুহারা, সর্বহারা, রাষ্ট্রহারা মানুষরা তাদের স্বপ্নের কথা বলে, তাদের অধিকার হারানোর কথা বলে। নাটকটি শিক্ষার্থীদের চিন্তাকে জাগ্রত করবে, সেইসঙ্গে দর্শকের মাঝে ভাবনার খোরাক জোগাবে। বাংলাদেশের থিয়েটার চর্চা নিয়ে সামগ্রিকভাবে আপনার মূল্যায়ন শুনতে চাই? আমার শুরুটা গ্রুপ থিয়েটার চর্চার মধ্য দিয়ে। পরবর্তী সময় নাট্যকলায় পড়ালেখা করেছি। এখনো থিয়েটার নিয়ে পড়ালেখা করছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এখন পুরো বিশ্বে থিয়েটার যেভাবে চর্চা হচ্ছে তার সঙ্গে তাল মেলাতে গেলে থিয়েটার নিয়ে পড়ালেখাটা জরুরি। একই সঙ্গে আমাদের দেশে শুধু নৈতিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে যে গ্রুপ থিয়েটার চর্চা সেটা পুরো বিশে^র কাছে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আমাদের নাট্যকলায় পড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু থিয়েটার করে জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রটা সেভাবে তৈরি হয়নি। ফলে নাট্যকলায় পড়ালেখা করে শিক্ষার্থীরা অন্য পেশায় যুক্ত হয়ে হয়তো আর থিয়েটারে যুক্ত থাকতে পারছে না। আবার কেউ কেউ শত প্রতিক‚লতার মাঝেও থিয়েটারটা করছেন। থিয়েটার করে যেন জীবিকা নির্বাহ করা যায় তার ব্যবস্থা করে দেয়াটা সরকারের দায়িত্ব। আমাদের পাশের দেশ ভারতেও কিন্তু পেশাদার থিয়েটার চর্চা হচ্ছে। থিয়েটার নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি? থিয়েটারকে আরো বেশি মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে চাই। আমি দেখতে চাই, থিয়েটারের টিকেটের জন্য মিলনায়তনের সামনে দর্শকের দীর্ঘ সারি। বিশ্ব মানের থিয়েটার করতে চাই। আমার শুরুটা যেহেতু গ্রুপ থিয়েটারে, তাই আমার একাডেমিক থিয়েটার শিক্ষা নিয়ে গ্রুপ থিয়েটার চর্চায় যুক্ত থাকব। সেভাবেই আমার কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। আপনাকে ধন্যবাদ। আপনাকেও ধন্যবাদ। ‘দ্য লোয়ার ডেপথস’ দেখার আমন্ত্রণ সবাইকে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App