×

আন্তর্জাতিক

রাশিয়া তদন্তে ট্রাম্পকে সমন জারির হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুলার

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ মে ২০১৮, ০৫:৫৯ পিএম

রাশিয়া তদন্তে ট্রাম্পকে সমন জারির হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুলার
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ তদন্তে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাক্ষ্য দিতে না চাইলে তার বিরুদ্ধে সমন জারি করা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রাশিয়া বিষয়ক বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা রবার্ট মুলার। চলতি বছর মার্চে ট্রাম্পের আইনজীবীদের সঙ্গে এক বৈঠকে মুলার এমন পদক্ষেপ নিতে পারেন বলে সতর্ক করেছিলেন। ট্রাম্পকে তদন্ত কর্মকর্তাদের সামনে হাজির হতে বাধ্য করা হবে বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী জন ডাউড মঙ্গলবার একথা জানিয়েছেন। মুলারের এ সমন জারির হুঁশিয়ারির খবর ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা প্রথম প্রকাশ করেছে। জোর করে হলেও ট্রাম্পের সাক্ষ্য নেওয়ার এমন ব্যবস্থা করার কথা মুলার সেবারই প্রথম বলেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ পত্রিকা বলেছে, রাশিয়া বিষয়ক তদন্তে কেন্দ্রীয় তদন্ত কর্মকর্তাদের জেরার মুখোমুখি হতে প্রেসিডেন্টের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই বলে মার্চের ওই বৈঠকে জোর দিয়ে বলেছিলেন ট্রাম্পের আইনজীবীরা। কিন্তু তদন্তে ট্রাম্প জেরার মুখোমুখি হতে আপত্তি জানালে মুলারের দলের কর্মকর্তারা তখন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তলবনামা জারি করবেন বলে জানান। সেইসঙ্গে প্রেসিডেন্টকে কি ধরনের প্রশ্ন করা হবে, সে বিষয়ে তার আইনজীবীদেরকে আরো সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতেও রাজি হয়েছিলেন তারা। মার্চের ওই বৈঠকের প্রায় দেড় সপ্তাহের মাথায়ই পদত্যাগ করেন ট্রাম্পের আইনজীবী জন ডাউড। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের তদন্ত ‘ছেলে খেলা নয়’ বলে তিনি মন্তব্য করেছিলেন। “আপনারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কাজে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন,” তদন্ত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সেসময় এমনটিই বলেছিলেন ডাউড। পরে মুলারের টিমের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ট্রাম্পের আইনজীবী জে সেকুলো প্রেসিডেন্ট সম্ভাব্য যেসব প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারেন সেগুলোর একটি তালিকা তৈরি করেন। এ তালিকায় ৪৯ টি প্রশ্ন ছিল। তালিকাটি সোমবার প্রথম প্রকাশ করেছে ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকা।এতে নানা প্রশ্নের মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের কোনো আাঁতাত ছিল কিনা, ট্রাম্প রাশিয়া বিষয়ক তদন্ত বেআইনিভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কিনা, এফবিআই এর সাবেক পরিচালক জেমস কোমিকে বরখাস্ত করার পেছনে ট্রাম্পের উদ্দেশ্য কি ছিল- এ সংক্রান্ত প্রশ্নও রয়েছে। মঙ্গলবার এক টুইটে জিজ্ঞাসাবাদের প্রশ্ন গণমাধ্যমে ফাঁস হওয়ার ঘটনাকে ‘অমর্যাদাকর’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন ট্রাম্প। তার আইনজীবী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলেছেন, “আমরা বিশেষ কাউন্সেল মুলারের কার্যালয়ের সঙ্গে হওয়া কথাবার্তা নিয়ে আলোচনা করি না।” তবে ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ বলছে, প্রেসিডেন্টের আইনজীবী নয়, অন্য একজনের কাছ থেকে প্রশ্নের তালিকা পাওয়া গেছে। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র রাজ শাহ বলেছেন, নিউ ইয়র্ক টাইমসের ওই প্রতিবেদন ‘ত্রুটিপূর্ণ।” ট্রাম্প মঙ্গলবার এক টুইটে গণমাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসের সমালোচনা করে বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে আঁতাতের কোনো প্রশ্ন নেই। যে অপরাধ কখনো ঘটেইনি তার বিচার আটকানোটাও খুব কঠিন মনে হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ছিল কিনা তা নিয়ে তদন্ত করছে মুলারের নেতৃত্বাধীন দল। নির্বাচনী প্রচারে ক্রেমলিনের সঙ্গে ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের সম্ভাব্য যোগসাজশ এবং এ সংক্রান্ত এফবিআইয়ের তদন্তে ট্রাম্প বেআইনিভাবে কোনো বাধা দিয়েছিলেন কিনা তাও খতিয়ে দেখছে তারা। গত বছর মে মাসে এফবিআইয়ের তৎকালীন পরিচালক জেমস কোমিকে ট্রাম্প বরখাস্ত করার পরপরই মুলারকে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ নিয়ে তদন্তের কারণেই ট্রাম্প তাকে বরখাস্ত করেছিলেন বলে অভিযোগ কোমির। ট্রাম্প অবশ্য শুরু থেকেই নির্বাচনী প্রচারণায় তার শিবিরের সঙ্গে মস্কোর যোগসাজশের কথা অস্বীকার করে আসছেন। রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্ট তদন্তের অন্যতম লক্ষ্য হলেও তাকে অপরাধী বানানোর জন্য এ তদন্ত চলছে না বলে মার্চে তার আইনজীবীকে বলেছিলেন মুলার। তদন্তের কাজে মুলার কখন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করতে চাইবেন তা জানা যায়নি। ট্রাম্প অবশ্য একবার নিজে থেকেই বলেছিলেন তিনি মুলারের সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছুক। তবে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত এটর্নির কার্যালয়ে তল্লাশির ঘটনার পর তার এ উৎসাহে অনেকটাই ভাটা পড়েছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App