×

বিনোদন

গল্প নয় সত্যি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০১৮, ০৪:৪২ পিএম

গল্প নয় সত্যি
দ্য থিওরি অব এভরিথিং বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং মারা গেছেন গত ১৪ মার্চ। তাকে ঘিরেই হলিউডে তৈরি হয়েছিল একটি সিনেমা। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় তিনি তার স্ত্রী জেন ওয়াইন্ডের সঙ্গে পরিচিত হন। স্টিফেন হকিংয়ের মোটরনিউরন ডিজিজ থাকা সত্তে¡ও তাদের ভালোবাসাকে চ‚ড়ান্ত রূপ দিতে ১৯৮১ সালে ওয়াইন্ডের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। পরবর্তী সময়ে ‘বিগ ব্যাং থিওরি’ নিয়ে গবেষণার সময় তিনি প্রচÐ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং হুইল চেয়ারে থেকে তার গবেষণার কার্যক্রম চালিয়ে যান। এই কঠিন মুহ‚র্তে তার স্ত্রী পাশে থেকে অনুপ্রেরণা জোগান। নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে সিনেমার গল্পটি এগিয়ে যায়। সিনেমাটিতে স্টিফেন হকিংয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন এডি রেডমেইন ও তার স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফেলিসিটি জোনস। ১২৩ মিনিটের এই ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন অ্যান্থনি ম্যাককার্টেন। ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ সিনেমাটির পরিচালক জেমস মার্শ জিতে নেন ব্যবসায়িক সাফল্যসহ অসংখ্য পুরস্কার। এছাড়াও স্টিফেন হকিংয়ের চরিত্রে অভিনয়কারী এডি রেডমেইনের কাজ সমাদৃত হয় এবং তিনি বিভিন্ন পুরস্কারের পাশাপাশি শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। দ্য ভউ এ সিনেমাটি নব্যবিবাহিত দম্পতি কিম ও ক্রিকিট কারপেন্টারের বাস্তব জীবনের গল্প নিয়ে। ১৯৯৪ সালে ক্রিকিট এক ট্রাক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হন। এরপর তিনি কোমায় থাকেন ২১ দিন। পরবর্তী সময়ে দেখা যায় ক্রিকিট তার ফেলে আসা তার বিগত ২ বছরের স্মৃতি কিছুই মনে করতে পারছেন না। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এ রোগকে অ্যামনেসিয়া বলা হয়ে থাকে। তিনি পরবর্তী সময়ে নতুন করে হাঁটাচলা, কথা বলা সবকিছু শিখে নেন। এই কঠিন সময়গুলোতে তার স্বামী কিম সর্বদাই পাশে ছিলেন। ক্রিকিটের কিছুই মনে না থাকার দরুন তারা পরবর্তী সময়ে আবার বিয়ে করেন। বাস্তব জীবনের এই অসাধারণ গল্প অবলম্বনে তৈরি করা সিনেমাটিতে অভিনয় করেন চ্যানিং টাটুম এবং র?্যাচেল ম্যাকএডামস। সিনেমাটি পরিচালনা করেন মাইকেল সাকসি যা ২০১২ সালে মুক্তি পায় এবং অসাধারণ জনপ্রিয়তা লাভ করে। কুইন অব দ্য ডেজার্ট ব্রিটিশ লেখিকা গারট্রুড বেলের প্রেমকাহিনী অবলম্বনে করা এ সিনেমাটি। গারট্রুড ব্রিটেনের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সর্বপ্রথম মহিলা ছিলেন যিনি আধুনিক ইতিহাসে মার্গারেট হল, অক্সফোর্ড থেকে স্নাতক শেষ করেন। কর্মসূত্রে তিনি ১৮৯২ সালে ইরান ভ্রমণ করেন। সেখানে তিনি ফরেন সার্ভিসের সদস্য হেনরি কাদোগ্যানের প্রেমে পড়েন। কিন্তু বিধি বাম! তার পরিবার হেনরির জুয়ার অভ্যাসকে ভালোভাবে নেয়নি। তাই হেনরির সঙ্গে তার আর সংসার করা হয়নি। পরবর্তী সময়ে তিনি এক বিবাহিত ব্রিটিশ অফিসার ডিক ডাফটি উইলির প্রেমমুগ্ধ হন। টেলিগ্রাফ পত্রিকা অনুযায়ী তাদের এ সম্পর্কে অনেকদিন চিঠি চালাচালি হয়। এমনকি বেল তার প্রেমিককে আপন করে পাওয়ার জন্য ডাফটির স্ত্রীকে আত্মহত্যার হুমকিও দেন। সব নাটকীয়তার করুণ অবসান ঘটে যখন ডাফটি ১৯১৫ সালে গালিপলিতে যুদ্ধে মারা যান। এই বাস্তব গল্প নিয়ে নির্মিত সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন নিকোল কিডম্যান, জেমস ফ্রাঙ্কো, রবার্ট প্যাটিনসন ও ডেমিয়েন লুইস ছাড়াও আরো অনেকে। ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ সিনেমাটি পরিচালনা করেন ওয়ার্নার হার্জোগ। আ বিউটিফুল মাইন্ড বিখ্যাত গণিতবিদ ও অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী জন ন্যাশের জীবন থেকে নেয়া এই সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন পরিচালক রন হাওয়ার্ড। গেইম থিওরির উদ্ভাবক এ মানুষটির প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়াটা ছিল তার জীবনের অন্যতম এক প্রতিবন্ধকতা। নানান ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ন্যাশের জীবনে স্ত্রী এলিসিয়া লার্ডের অটুট ভালোবাসা ছিল অনন্য। এ সিনেমাটিতে বিজ্ঞানী ন্যাশের চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাসেল ক্রো আর তার স্ত্রী এলিসিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেন জেনিফার কানেলি। ৪টি ক্যাটাগরিতে অস্কারজয়ী এ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিল ২০০১ সালে, যা হলিউডের অন্যতম ব্যবসাসফল ছবিগুলোর মধ্যে একটি। দ্য এজ অব লাভ ওয়েলসের বিখ্যাত কবি ডিলান থমাসের বাস্তব জীবনের ঘটনা অবলম্বনে গড়ে উঠেছে এ সিনেমার কাহিনী। ডিলান ও তার প্রথম প্রেমিকা ভেরা ফিলিপসের জটিল প্রেমকাহিনী গল্পকে দিয়েছে জটিল পরিণতি। সিনেমাটিতে ডিলানের চরিত্রে অভিনয় করেন ম্যাথু রাইস, তার স্ত্রী ক্যাটলিন ম্যাকনামারার চরিত্রে অভিনয় করেন সিয়েনা মিলার এবং তার প্রেমিকা ভেরার চরিত্রে অভিনয় করেছেন কেরা নাইটলি। এটি মুক্তি পায় ২০০৮ সালে যা এডিনবার্গ আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভালে মনোনীত হয়। এ সিনেমাটি পরিচালনা করেন জন মেইব্যুরি। বিকামিং জেইন এই সিনেমাটি গড়ে উঠেছে বিখ্যাত ইংরেজ লেখক জেইন অস্টিন ও আইরিশ আইনপ্রণেতা থমাস লেফ্রয়ের ভালোবাসার গল্পকে কেন্দ্র করে। তাদের দু’পরিবার থেকেই আপত্তি জানানোর জন্য তাদের ঘর বাঁধার স্বপ্ন অধরাই রয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ভালোবেসে যাওয়া জেইন ও লেফ্রয়ের জীবনে অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এগিয়ে যায় তাদের এ সম্পর্ক। সিনেমাটিতে জেইনের চরিত্রে অভিনয় করেন অ্যান হ্যাথঅ্যাওয়ে ও থমাস লেফ্রয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন জেমস ম্যাকএভয়। ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ সিনেমাটি পরিচালনা করেন জুলিয়ান জেরাল্ড। দ্য ইনভিজিবল উইমেন ব্রিটিশ সাহিত্যিক চার্লস ডিকেন্সের নাম শোনেননি এমন মানুষ হয়তো কমই আছেন। এই মহান সাহিত্যিকের জীবনের কাহিনী নিয়ে রচিত এই দ্য ইনভিজিবল উইমেন সিনেমাটি। ১৮৫৭ সালে লন্ডনের হায়মার্কেট থিয়েটারে অভিনয় করতে আসা ১৮ বছর বয়সী তরুণী এলেন নেলি টার্নানের দেখা পান। তখন ৪৫ বছর বয়স্ক বিবাহিত এ সাহিত্যিক ক্রমেই তার প্রতি আকৃষ্ট হন। অনেক নাটকীয়তার মধ্যে চলতে থাকে তাদের ভালোবাসা। ১৮৭০ সালে ডিকেন্সের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ছিল তাদের এ বন্ধন। এ সিনেমায় প্রেমিকা নেলির চরিত্রে অভিনয় করেন ফেলিসিটি জোনস ও চার্লস ডিকেন্সের চরিত্রে অভিনয় করেন স্বয়ং পরিচালক র‌্যালফ ফিয়েনেস। এ সিনেমাটি কয়েকটি ক্যাটাগরিতে অস্কারের জন্য মনোনীত হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App