×

বিনোদন

নব্বইয়ের নওজোয়ান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০১৮, ০১:২৯ পিএম

নব্বইয়ের নওজোয়ান
নব্বইয়ের নওজোয়ান
নব্বইয়ের নওজোয়ান
নব্বইয়ের নওজোয়ান
নব্বইয়ের নওজোয়ান
নব্বইয়ের নওজোয়ান
নব্বইয়ের নওজোয়ান
ড্রয়িংরুমের দর্শকদের চোখে মুগ্ধতার আবেশ ছড়িয়ে নব্বই দশক হারিয়ে গেছে কালের গর্ভে। সেই নব্বই দশকের ঐতিহ্য বয়ে বেড়াচ্ছেন তখনকার ডাকসাইটে অভিনেতারা। যাদের অভিনয়ের জাদুতে নির্ঘুম রাত কাটত তরুণীদের। তাদের কেউ কেউ এখনো সময়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দোর্দন্ত প্রতাপে কাজ করছেন। কেউ কেউ স্বেচ্ছায় বিদায় নিয়েছেন ব্যস্ততার ইঁদুর দৌড় থেকে। কেমন আছেন নব্বইয়ের সেই নওজোয়ানরা? জানাচ্ছেন মাহফুজুর রহমান
জাহিদ হাসান গত বছর পঞ্চাশ পূরণ করলেন জাহিদ হাসান। কিন্তু চেহারায় তার ছাপ নেই। এখনো দিব্যি তরুণ-যুবার চরিত্র করছেন। এখানেই জাহিদ হাসান তার সমসাময়িকদের টেক্কা দিয়েছেন। তরুণ প্রজন্মের অভিনেতাদের দাপটের মুখে এতটুকু ম্লান হয়নি তার জনপ্রিয়তা। চুটিয়ে কাজ করছেন তো বটেই, রীতিমতো প্রভাব ধরে রেখেই কাজ করছেন। ‘আরমান ভাই’ নাটকটি তাকে পুনর্জন্ম দিয়েছে। এ প্রজন্মের দর্শকদের কাছেও তাকে প্রিয়তা দিয়েছে। অথচ তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন আশির দশকে। তার অভিনীত প্রথম টিভি নাটক প্রচার হয় ১৯৯০ সালে। তারও আগে জাহিদ মঞ্চ নাটকে ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি লাইমলাইটে আসেন টিভিতে। পরে নায়ক হিসেবে আসেন চলচ্চিত্রে। হুমায়ূন আহমেদের ছবি ২০০০ সালে ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ এনে দেয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। মাহফুজ আহমেদ নিজেকে ইদানীং গুটিয়ে নিয়েছেন মাহফুজ আহমেদ। কাজ করছেন কম কম। অথচ দু’চার বছর আগেও ব্যস্ততায় তিনি ছিলেন প্রথম সারিতে। অভিনয় কমিয়ে তিনি মনোযোগী হয়েছেন ব্যবসায়ে। তবে একেবারে ছেড়ে যাননি টিভির আঙিনা। এই বয়সেও ধরে রেখেছেন চাহিদা। ‘নুুরুল হুদা’ খ্যাত এই অভিনেতা মিডিয়ায় পথচলা আরম্ভ করে আশির দশকের শেষ প্রান্তে। আলোচনায় আসেন ‘কোথাও কেউ নাটক’ থেকে। ১৯৯৩ সালে প্রচার হয় হুমায়ূন আহমেদের লেখা নাটকটি। গোটা নব্বই দশক প্রবল দাপটে পার করেছেন মাহফুজ। ১৯৯৮ সালে ‘প্রেমের কসমে’ নায়ক বনে যান তিনি। এরপর চলচ্চিত্রে ব্যস্ত হওয়ার চেষ্টা ছেড়ে দিয়ে টিভিতে দর্শক পছন্দের কেন্দ্রে থাকেন অনেক বছর। ২০১৫ সালে ‘জিরো ডিগ্রি’তে পেলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তৌকীর আহমেদ তৌকীর আহমেদও আশির দশকের শেষের দিকে ঢোকেন মঞ্চে। বিটিভির সুবাদে তিনি কুড়ান দর্শকপ্রিয়তা। বিপাশা হায়াতের সঙ্গে জুটি বেঁধে তিনি গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেন। পরে নায়িকাকে বিয়েও করে নেন। সফল পর্দা ও বাস্তব জুটি হিসেবে তারা এখন আদরণীয়। বিপাশা নিজেকে গুটিয়ে নিলেও তৌকীর আজো ব্যস্ত। অভিনেতা হিসেবে কাজ কম করলেও নির্মাতা হিসেবে প্রথম সারিতে তিনি। বিনোদন ছবির জগতে নয়, ব্যতিক্রমী ভাবনার ছবিতে আলাদা দর্শক শ্রেণি তৈরি করেছেন তৌকীর। ‘অজ্ঞাতনামা’ ছবি নির্মাণ করে প্রাপ্ত প্রশংসাকে তিনি বয়ে এনেছেন ‘হালদা’ পর্যন্ত। এটি শেষ করে ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম ছবি ‘ফাগুন হাওয়া’ তৈরি করছেন তৌকীর। বলাই বাহুল্য তার প্রথম ছবি ‘জয়যাত্রা’ শ্রেষ্ঠ ছবি হিসেবে জয় করেছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। শহীদুজ্জামান সেলিম আশির দশকের শুরুতে মঞ্চে, শেষের দিকে টিভিতে পা ফেলেন শহীদুজ্জামান সেলিম। নব্বই দশকে আসে তার পরিচিতি। টিভি নায়ক হিসেবে খুব বেশি জননন্দিত না হলেও তিনি দ্রæত চরিত্রাভিনেতা হিসেবে একটি পোক্ত জায়গা করে নেন। প্রধান চরিত্রে বেশ কিছু নাটকে সেলিম ওঠেন ঝলসে। সাম্প্রতিককালে তিনি খল নায়ক রূপে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ‘চোরাবালি’ ছবিতে অভিনয় করে পেয়েছেন খল অভিনেতার শ্রেষ্ঠ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ‘দেবদাস’ ছবিতে চুনিলালের চরিত্রও করেছেন সেলিম। মেঘমল্লার, সুলতানা বিবিয়ানা, বাপজানের বায়স্কোপ, পদ্মপাতার জল ইত্যাদি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ইদানীং তিনি টিভি ও চলচ্চিত্র দুই মাধ্যমেই সমানতালে কাজ করছেন। নব্বইয়ের এই অভিনেতা তার যৌবনের মতো এই মধ্যবয়সেও দ্যুতি ছড়াচ্ছেন অভিনয়ের আঙিনায়। আজিজুল হাকিম নব্বই দশকে আজিজুল হাকিমকে বলা হতো বয়স চুরি করা অভিনেতা। যিনি বয়সকে এক প্রকার জয় করে ফেলেছিলেন। তার যতটা বয়স ছিল তার চেয়ে অনেক কম বয়সী চরিত্র আজিজুল হাকি করতেন। তার আরো খ্যাতি ছিল চুটিয়ে অভিনেত্রীদের বিপরীতে কাজ করার। হাঁটুর বয়সী অভিনেত্রীদের বিপরীতে তিনি অভিনয় করতেন। সে সব নাটকের দর্শকপ্রিয়তা পেতেও বেগ পেতে হতো না। দীর্ঘ সময় ধরে নায়কের চরিত্র করেছেন তিনি। বিটিভির জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ার পর থেকে আজিজুল হাকিম কোণঠাসা হতে থাকেন। তার বয়স বাড়তে থাকে। ইদানীং আর তিনি নায়কের চরিত্র করছেন না। তবে অভিনয় ছাড়েননি। আগের মতোই স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেই কাজ করছেন। অভিনয়ের বাইরে তেমন কিছু তাকে কখনো করতে দেখা যায়নি। টনি ডায়েস রোমান্টিক নায়কের চরিত্রে টনি ডায়েস ছিলেন অপ্রতিদ্বদ্বী। সুন্দরী নায়িকাদের বিপরীতে অভিনয় করে এই শ্যামলকান্তি নায়ক অনায়াসে দর্শক মন জয় করেছেন। আশির দশকের শেষে তিনি আসেন মঞ্চে। নব্বই দশকের মাঝামাঝিতে টিভিতে আসার পর থেকেই তিনি প্রচন্ড ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। বিটিভির বাইরে অন্যান্য চ্যানেল আসার পরও তিনি চাহিদা ধরে রেখে এগিয়েছেন। প্রায় চার শতাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন টনি ডায়েস। শেষের দিকে আসেন চলচ্চিত্রেও। ‘মেঘের কোলে রোদ’ ছবিতে পপির বিপরীতে অভিনয় করেন টনি ডায়েস। নাটক করতে করতেই প্রেমে পড়েন সহশিল্পী প্রিয়া ডায়েসের। বিয়েও করে ফেলেন এক পর্যায়ে। পরে তারা যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে চলে যান। বেছে নেন প্রবাস জীবন। এখন সেখানেই মেয়ে-বউকে নিয়ে আছেন টনি ডায়েস।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App