×

বিনোদন

আগুনঝরা দিনের গান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০১৮, ০২:২১ পিএম

আগুনঝরা দিনের গান
বলা হয়ে থাকে, সংকটের সময়েই কোনো জনগোষ্ঠীর শিল্প-সংস্কৃতির নতুন রূপরেখা তৈরি হয়। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তৈরি হয়েছে অসংখ্য দেশের গান। সেই গানগুলো প্রেরণা জুগিয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের। ঘর হারানো মানুষদের জুগিয়েছে সাহস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গে জড়িয়েছে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যরকম এক লড়াইয়ের গল্প। জয় বাংলা বাংলার জয়, আজ রক্তসাগর উঠে উছলিয়া, রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি, বিজয় নিশান উড়ছে ঐ, সাগর পাড়িতে ঝড় আসে যদি, সোনায় মোড়ানো বাংলা মোদের, ও আমার দেশের মাটি, জনতার সংগ্রাম চলবে, দুর্গমগিরি কান্তার মরু, আমরা সুর সৈনিক মুক্তিরসহ অসংখ্য গান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রেখেছে। আবদুল জব্বার, শাহীন সামাদ, মনোরঞ্জন ঘোষাল, মো. রফিকুল আলম, তিমির নন্দী, নমিতা ঘোষ, মালা খুররম, রুপা মাহমুদ, বুলবুল মহলানবীশ, কল্যাণী ঘোষ, অনুপ ভট্টাচার্য, উমা খান, আবু নওশের, রেজাউল করিম, তপন মাহমুদ, মলয় কুমার গাঙ্গুলী, অরূপ রতন চৌধুরী, এম এ মান্নান, কামালউদ্দিন আহমেদের মতো শব্দসৈনিকরা সে দিন কণ্ঠে তুলেছিলেন যুদ্ধ জয়ের গান। সে এক অন্যরকম লড়াইয়ের গল্প। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের উত্তাল দিনগুলোতে প্রেরণার উৎস হিসেবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গোপন কার্যালয় থেকে বাজানো হতো দেশের গান। বিপ্লবী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রথম পর্যায়ে অনুষ্ঠান স¤প্রচার হয়েছিল ২৬ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়ে এই বেতার কেন্দ্রের স¤প্রচার হতো ভারতের আগরতলার তিনটি জায়গা থেকে। এরপর তৃতীয় পর্যায়ে গিয়ে স¤প্রচার শুরু হলো কলকাতায় বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের স্টুডিও থেকে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারতের অস্থায়ী শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছিলেন বাংলাদেশের যেসব মানুষ তাদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে শরণার্থী ক্যাম্পে গান গেয়ে বেড়াতেন বাংলাদেশের বেশ কিছু শিল্পী। যুদ্ধ জয়ের সেই উত্তাল সময়ে ট্রাকে ঘুরে ঘুরে শরণার্থী ক্যাম্প ও মুক্তাঞ্চলে মুক্তির গান শুনিয়েছেন শিল্পীরা। খোলা ট্রাকে ‘বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থার ব্যানার নিয়ে শরণার্থী শিবির ও মুক্তাঞ্চলে ঘুরে বেড়ানো সেই দলে ছিলেন ১৯ বছরের তরুণী শাহীন সামাদ। তিনি বলেন, সেই দিনগুলো ছিল স্বপ্নের মতো। একটা দেশের স্বপ্ন বুকে নিয়ে অসহায় মানুষগুলো কাছে ঘুরে বেড়িয়েছি। মুক্তিযোদ্ধাদের দেশের গানের মাধ্যমে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছি। দেশ স্বাধীনের পর এখনো স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গানগুলো মানুষের মুখে মুখে গাওয়া হয়। এখনো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শিল্পীরা গেয়ে ওঠেন ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ কিংবা ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’। তখন শিহরিত হন শাহীন সামাদ। তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের শিল্পীদের দেশের গান গাইতে দেখলে ভীষণ মুগ্ধ হয়। এ প্রজন্মের অনেক শিল্পীই তাদের মতো করে দেশের গান গেয়ে প্রিয় মাতৃভ‚মিকে তাদের ভালোবাসার কথা জানাচ্ছে। তবে আমাদের দেশে দিবসকেন্দ্রিকই দেশের গান বেশি হচ্ছে। সারা বছরই দেশের গান, মায়ের গান করতে হবে। স্কুল-কলেজে ছেলেমেয়েদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার জন্য দেশের গান গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App