×

জাতীয়

শোকে স্তব্ধ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০১৮, ০৭:৩৮ পিএম

বিমান দুর্ঘটনায় সিলেটের জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের ১৩ নেপালি শিক্ষার্থী হতাহতের ঘটনায় শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কলেজের পক্ষ থেকে তিন দিনের শোক কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এদিকে ওই ১৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রিন্সি দাম ও সামিরা বায়জানকার নামের দুই শিক্ষার্থী জীবিত আছেন বলে জানা গেছে। সিলেটে অবস্থানরত নেপালি শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে মেডিকেল কলেজের উপপরিচালক ডা. আরমান আহমদ শিপলু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গতকাল তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, নেপালে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলার বিমানে সিলেটের জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১১ ছাত্রী, দুই ছাত্র ছিল। তাদের সবাই মারা গেছেন, প্রথমে এমন আশঙ্কা করা হয়। তবে পরে খবর আসে এদের মধ্যে দুজন বেঁচে আছেন। এদিকে শোক কর্মসূচির প্রথম দিন গতকাল মঙ্গলবার কলেজের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ছিল। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেন। পাশাপাশি কলেজের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। গত সোমবার রাতে প্রেস ব্রিফিংয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আবেদ হোসেন তিন দিনের শোক কর্মসূচি ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার সকালে রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের নেপালি ছাত্রাবাসে গিয়ে দেখা যায়, শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনেককে অঝোরে কাঁদতে দেখা যায়। তবে শোকাচ্ছন্ন নেপালি শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। নেপালি ছাত্রাবাসের এই শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে পুরো কলেজ ক্যাম্পাসে। রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, গত শনিবারও ওদের সঙ্গে কথা হয়েছে। বলেছিলেন, রেজাল্ট বের হওয়ার পর এ হাসপাতালেই ইন্টার্ন করবেন। মর্মান্তিক এ ঘটনায় খুব খারাপ লাগছে। বলে বুঝানো যাবে না। এ নিয়ে ফেসবুকে রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মৈত্রেয়ী দেব লিখেছেন, শনিবারও আঞ্জিলার সঙ্গে কথা হয়েছে। বলেছিল, এক্সাম শেষ, আশীর্বাদ করবেন ম্যাডাম। আমরা বাড়ি যাব। আমি বলেছিলাম, ডাক্তার হয়েই দেখা করো কিন্তু। তিনি আরো লিখেন, আমি (F2) ব্যাচের টিউটোরিয়াল টিচার ছিলাম। নিগা, আঞ্জিলা, প্রিন্সি ছিল আমার মেয়ের মতো। শেষ ক্লাসের দিন আমাকে জড়িয়ে ধরে মেয়েগুলো কাঁদছিল। যখনই দেখা হতো হাসিমুখে জড়িয়ে ধরত। বিমান দুর্ঘটনার খবর শুনে কি যে কষ্ট হচ্ছে বলে বুঝাতে পারব না। গত ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত রবিবার। দুই মাস পর ফলাফল প্রকাশ করার কথা রয়েছে। এর আগেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাকে বড়ই পীড়াদায়ক বললেন রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. আবেদ হুসাইন। তিনি বলেন, কলেজে নেপালের প্রায় আড়াইশ শিক্ষার্থী রয়েছে। রবিবার এমবিবিএস ১৯তম ব্যাচের ফাইনাল পরীক্ষা শেষে ওই দিন রাতেই ১৩ শিক্ষার্থী গ্রিন লাইনযোগে ঢাকায় যান। সেখান থেকে সোমবার সকালে ইউএস-বাংলার একটি ফ্লাইটে করে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে যাত্রা করেন তারা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App