×

জাতীয়

জোট শরিকদের চাপে দুদল : এখনই আসন ভাগের তাগিদ ১৪ দলে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০১৮, ০৪:৪৫ পিএম

জোট শরিকদের চাপে দুদল : এখনই আসন ভাগের তাগিদ ১৪ দলে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচনে অংশ নিলে এক হিসাব আর তারা অংশ না নিলে আরেক হিসাব। তবে অবস্থা পর্যালোচনায় বিএনপি-জামায়াত জোট যেকোনো পরিস্থিতিতে নির্বাচনে অংশ নিবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। সে ক্ষেত্রে ১৪ দলের সঙ্গে এরশাদের জাতীয় পার্টি ছাড়াও আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দল জোটবদ্ধ হতে পারে বলে আলোচনা রয়েছে। তবে জোটের রাজনীতিতে সব আলোচনাকে ছাপিয়ে এখনি সামনে চলে এসেছে আসন ভাগাভাগির হিসাব। দশম সংসদের চেয়ে বেশি আসন চায় ১৪ দলীয় জোটের শরিক সবকটি দলই। ৩০০ আসনে প্রার্থী রয়েছে আওয়াজ তুলে জোরালোভাবে দর কষাকষি করতে চায় জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগের ভাবনায় রয়েছে বিএনপি থেকে বের হয়ে রাজনৈতিক দল করা বেশ কয়েকজন নেতার দলও। জোটের বৈঠকে আসন ভাগাভাগি নিয়ে এখনো আলোচনা শুরু না হলেও ভেতরে ভেতরে অঙ্ক কষছেন জোটের শরিকরা। অনেক আসনেই আওয়ামী লীগ দলীয় বর্তমান সংসদ সদস্য বা সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাঠে রয়েছেন জোটের শরিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। জোট প্রধান দল আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে আসন ভাগাভাগি সুরাহার জন্য জোটের মধ্যে চাপ রয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। জোটের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, তার অংশের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, জাতীয় পার্টি-জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি, দলটির মহাসচিব এমএ আউয়াল, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদের আরেক অংশের কার্যকরী সভাপতি মাঈনউদ্দিন খান বাদল, জাসদের এই অংশের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানসহ ১৪ দলীয় জোটের ন্যূনতম ১০ জন শীর্ষ নেতা আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন বলে জোটের সবুজ সংকেত রয়েছে। কিন্তু শরিক দলগুলো আরো অনেক আসনে ছাড় চায়। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবর মতে, জোট শরিকদের দাবি কমপক্ষে ৭০টি আসন। আর যদি এরশাদের জাতীয় পার্টি যুক্ত হয়ে মহাজোটগতভাবে নির্বাচন হয় তবে আসন ভাগাভাগি আরো জটিল হতে পারে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ড এবং স্থানীয় সরকার ও পরিষদ মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য রশিদুল আলম বলেছেন, জোটের আসন ভাগাভাগির ব্যাপারে জোট প্রধান শেখ হাসিনা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন। এখনো এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়নি। ১৪ দলের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ভোরের কাগজকে বলেন, নির্বাচনে তাদের দল জোটের কাছে কতোটি আসন চাইবে তা তাদের ভাবনার মধ্যে রয়েছে। জোটের বৈঠকে এখনো এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়নি। আলোচনায় সম্মানজনক আসন দাবি করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, জিতে আসতে পারে এমন প্রার্থীদের আসনগুলো চাওয়া হবে জোটের বৈঠকে। জোটপ্রধান আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বলেন, আমরা জোটগতভাবেই আগামী নির্বাচনে অংশ নেব, এটা চূড়ান্ত হয়েছে। জাসদ সারাদেশে কাজ করছে। সাংগঠনিক কর্মসূচি পালন করছে। নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আসন ভাগাভাগির ব্যাপারে এখনো দলীয় ফোরামে বা জোটে আলোচনা শুরু হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জোটের বৈঠকে এ নিয়ে কথা হবে। তিনি সময় দিলে বৈঠক হবে। প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার পর ১৪ দল গঠনের উদ্যোগ শুরু হয়। নানামুখী চেষ্টার ফলে পরের বছর ২৩ দফা ঘোষণা সামনে রেখে বাম প্রগতিশীল জোট ১১ দল, আওয়ামী লীগ, জাসদ ও ন্যাপ মিলে ১৪ দল গঠিত হয়। পরে সিপিবি, বাসদসহ ১১ দলের চারটি দল বেরিয়ে যায়। ওয়ার্কার্স পার্টি, গণফোরাম, সাম্যবাদী দল, গণতন্ত্রী পার্টি, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, গণআজাদী লীগ, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, বাসদ (একাংশ) এ আটটি দল ১৪ দলে থেকে যায়। ফলে সেই সময়ে ১৪ দল মূলত ১১ দলীয় জোটে পরিণত হয়। পরে গণফোরাম জোট থেকে বাদ পড়ে। এতে ১৪ দল ১০ দলীয় জোটে পরিণত হয়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জাতীয় পার্টি (জেপি) ও তরীকত ফেডারেশনকে জোটে নেয়া হয়। বছরখানেক আগে জাসদ ভেঙে দুটি আলাদা জাসদ গঠিত হয়। দুই জাসদই বর্তমানে ১৪ দলে রয়েছে। ফলে জোটটিতে এখন ১৩টি দল রয়েছে। ইসলামী ঐক্য ফ্রন্ট বাংলাদেশ ১৪ দলীয় জোটে যুক্ত হচ্ছে বলে খবর রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App