×

অর্থনীতি

ব্যাংকে অনিয়ম কমছে: অর্থমন্ত্রী

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০১৮, ০৯:৪৫ পিএম

ব্যাংকে অনিয়ম কমছে: অর্থমন্ত্রী

ব্যাংকে জালিয়াতির ঘটনায় জাতীয় সংসদে আনা একটি প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলছেন, ব্যাংকিং খাতে জালিয়াতির ঘটনা নতুন নয়। দেশের জন্মলগ্ন থেকেই এই সমস্যা ছিল। বরং আগের তুলনায় অনিয়ম কমে আসছে।

এক সময় ব্যাংকে খেলাপি ঋণ ৪০ শতাংশের মতো ছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেটি এখন কমে ১০ শতাংশের কাছাকাছি এসেছে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বেসরকারি দিবসে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের আনা এক সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের জবাবে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। ব্যাংকিং খাতের জালিয়াতির ঘটনায় সরকারের বদনাম হচ্ছে জানিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তাব জানিয়ে এই প্রস্তাব আনা হয়।

পরে অর্থমন্ত্রীর কথার পর প্রস্তাবটা ফিরিয়ে নেন ইসরাফিল আলম।

প্রস্তাবে ইসরাফিল বলেন, ‘ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনিয়ম ও ত্রুটিমুক্তভাবে পরিচালনা করার জন্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা হোক।’

এরপর সংসদে তিনি ব্যাংকিং খাতে জালিয়াতি সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন তিনি।

এরপর ১০ জন সংসদ সদস্য এই প্রস্তাবে সংশোধনী দিয়ে অবিলম্বে শব্দটি সংযোজনের দাবি জানান।

এরপর এই প্রস্তাব নিয়ে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা এখনো পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত নয়। তবে এটাকে ত্রুটিমুক্ত করতে সরকারের চেষ্টার কমতি নেই। এগুলো কার্যকর করতে একটু সময় লাগে।’

ব্যাংক খাতের সুশাসন নিশ্চিত করতে সরকারের নানা উদ্যোগও তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের ব্যাংকগুলোতে অনিয়ম ও ত্রুটি বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে শুরু হয় এবং এক সময় মারাত্মক আকার ধারণ করে। একসময় খেলাপি ঋণ হয়ে যায় ৪০ শতাংশ। এখন তা ১১-১২ শতাংশে নেমে এসেছে।’

এরপর অর্থমন্ত্রী ব্যাংকিং খাতে সুশাসন আনতে নানা উদ্যোগ ও আইনি সংস্কারের কথা তুলে ধরে বলেন, ভবিষ্যতে এর সুফল মিলবে।

এরপর প্রস্তাব তোলা সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম তার প্রস্তাবর প্রত্যাহার করে নেন।

এর আগে প্রস্তাব উত্থাপনের সময় তিনি বলেন, ২০১৭ সালে ব্যাংক খাত নড়বড়ে অবস্থায় পড়েছে। ৫৭টি ব্যাংকের মধ্যে ২০ টিতে আর্থিক অবস্থা দৃশ্যমানভাবে খারাপ।

ইসরাফিল বলেন, খেলাপি ঋণ মারাত্মকভাবে বেড়েছে। নামে-বেনামে ইচ্ছামতো ঋণ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের পরিচালক, নির্বাহী, বড় কর্মকর্তারা এসব কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু মন্ত্রণালয়, সরকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

‘সরকারের প্রচেষ্টা নেই, আইন নেই, জনবল নেই—এ কথা বলতে পারি না। কিন্তু যারা এসব আইন প্রয়োগের দায়িত্বে আছে, প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে আছে তাদের ব্যর্থতার জন্য আর্থিক সেক্টর বিপর্যয়ের মুখে বিপন্নতার মুখে পতিত হয়েছে তার দায়িত্ব সরকার ও সংসদকে গ্রহণ করতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগকেও বহন করতে হচ্ছে।’

ইসরাফিল বিশেষ করে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের ফারমার্স ব্যাংকের অনিয়মের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মানুষ নিজের ভাই, বোনকেও টাকা দিতে ভয় পায়। কিন্তু ব্যাংকে অবলীলায় তারা টাকা রাখে। কিন্তু এখন এই ব্যাংক টাকা ফেরত দিতে পারছে না। এতে ব্যাংকিং খাতের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হবে।

ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যারা টাকা ফেরত দেননি তাদের তালিকা প্রকাশেরও দাবি জানান ইসরাফিল আলম।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App