প্রিন্ট: ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪৭ পিএম
আরো পড়ুন
বিমানবন্দরে তাবলিগ জামাতের বিক্ষোভ, যানজটের দুর্ভোগে পুরো এলাকা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০১৮, ০৫:৪৫ পিএম
ঢাকা-গাজীপুর ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলাচলকারী সব বাস সকাল থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকায় যাত্রীদের অনেককে বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হতে দেখা দেছে।
দুই গ্রুপে বিভক্ত তাবলিগ জামাতের একটি একটি অংশ জামাতের কেন্দ্রীয় এক শুরা সদস্যের বাংলাদেশে আসার প্রতিবাদে সকাল ৯টার দিকে বিমানবন্দর এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করলে যানজটেরও শুরু হয় বলে জানান বিমানবন্দর থানার ওসি নূর এ আজম।
পুলিশ জানায়, তাদের তৎপরতায় বিমানবন্দর গোল চত্বর থেকে হাতে গোনা কিছু যানবাহন বনানীর দিকে আসতে পারলেও বিমানবন্দর থেকে টঙ্গী বাজার ছাড়িয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তায় যানবাহন স্থবির হয়ে রয়েছে।
এ যানজটের কারণে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন উত্তরার অধিবাসীরা। এই আবাসিক এলাকার প্রতিটি সেক্টরের প্রত্যেক রাস্তায় যানজটের প্রভাব পড়েছে।
উত্তরার কেউ কেউ গাড়ি নিয়ে বাইরে বের হয়ে বাসার সামনেই যানজটে ঘণ্টাব্যাপী স্থবির হয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত বাসায় ফিরতে বাধ্য হয়েছেন।
উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক লায়লা আজিজ (৬০) বলেন, “আমার এক নিকটাত্মীয়কে ডাক্তার দেখানোর জন্য দুপুর ১২টায় অ্যাপয়েনমেন্ট ছিল। জ্যামের কারণে মিস হল।”
একই এলাকার ফারজানা চৌধুরী জানান, বুধবার উত্তরার শপিং কমপ্লেক্সগুলোয় সাপ্তাহিক ছুটি থাকার কারণে রাস্তাঘাটে মানুষ কম থাকে। তাই সাপ্তাহিক কাঁচাবাজারের কাজ তিনি বুধবারই সারেন।
“কিন্তু আজকে যে পরিস্থিতি…. আমাকে দুই হাতে দুই বাজারের ব্যাগ নিয়ে আড়াই কিলোমিটার পথ হেঁটে বাসায় ফিরতে হয়েছে।”
উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের বসবাস করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফজলুর রহমান।
বেলা আড়াইটার দিকে, দুই ঘণ্টা ধরে রাজলক্ষীর উল্টোদিকের সড়কে যানজটে আটকে রয়েছি।”
একই অভিজ্ঞতা হয়েছে উত্তরা ৫ নম্বরের নায়লা চৌধুরীরও।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নায়লা চৌধুরী দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বনানীতে তার অফিসের উদ্দেশে রওনা হন। কিন্তু যানজটের কারণে ৩ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর রোডে নিজের গাড়িতে প্রায় ঘণ্টাখানেক বসে থাকার পর বাসায় ফিরতে বাধ্য হন তিনি।
অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে বেড়াতে এসে উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের বোনের বাসায় থাকছেন শায়লা মোনায়েম। মেয়েকে নিয়ে বের হয়েছিলেন গুলশানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে; কিন্তু বাসার গেইটের সামনেই ৪০ মিনিট গাড়িতে বসে থাকতে হয় তাদের।
পরে বিকল্প পথে আশুলিয়া দিয়ে বেড়িবাঁধ হয়ে মিরপুর ও শ্যামলী পার হয়ে গুলশান পৌঁছান তারা।
ভারতীয় উপমহাদেশের সুন্নী মতাবলম্বী মুসলমানদের বৃহত্তম ধর্মীয় সংঘ তাবলিগ জামাতের মূল কেন্দ্র বা মারকাজ দিল্লিতে। কেন্দ্রীয় ওই পর্ষদকে বলা হয় নেজামউদ্দিন, যার ১৩ জন শুরা সদস্যের মাধ্যমেই উপমহাদেশে তাবলিগ জামাত পরিচালিত হয়।
এই পর্ষদের সদস্য মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভি সম্প্রতি নিজেকে তাবলিগের আমির দাবি করে বসেন। ফলে তার বাংলাদেশে আসা নিয়ে বাংলাদেশে তাবলিগের মূল দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়।
চলতি বছর ইজতেমায় যোগ দিতে ঢাকায় আসার কথা তার। এর জের ধরে সকাল থেকেই বিমানবন্দরের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করে তাবলিগ কর্মীরা।
বিক্ষোভের মধ্যেও দুপুরের দিকে দিল্লি থেকে মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভি ঢাকায় পৌঁছান। তবে বিকাল পর্যন্ত বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরে যেতে দেখা যায়নি।
সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন
এ সম্পর্কিত আরো খবর
মন্তব্য করুন
বিমানবন্দরে তাবলিগ জামাতের বিক্ষোভ, যানজটের দুর্ভোগে পুরো এলাকা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০১৮, ০৫:৪৫ পিএম
ঢাকা-গাজীপুর ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলাচলকারী সব বাস সকাল থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকায় যাত্রীদের অনেককে বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হতে দেখা দেছে।
দুই গ্রুপে বিভক্ত তাবলিগ জামাতের একটি একটি অংশ জামাতের কেন্দ্রীয় এক শুরা সদস্যের বাংলাদেশে আসার প্রতিবাদে সকাল ৯টার দিকে বিমানবন্দর এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করলে যানজটেরও শুরু হয় বলে জানান বিমানবন্দর থানার ওসি নূর এ আজম।
পুলিশ জানায়, তাদের তৎপরতায় বিমানবন্দর গোল চত্বর থেকে হাতে গোনা কিছু যানবাহন বনানীর দিকে আসতে পারলেও বিমানবন্দর থেকে টঙ্গী বাজার ছাড়িয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তায় যানবাহন স্থবির হয়ে রয়েছে।
এ যানজটের কারণে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন উত্তরার অধিবাসীরা। এই আবাসিক এলাকার প্রতিটি সেক্টরের প্রত্যেক রাস্তায় যানজটের প্রভাব পড়েছে।
উত্তরার কেউ কেউ গাড়ি নিয়ে বাইরে বের হয়ে বাসার সামনেই যানজটে ঘণ্টাব্যাপী স্থবির হয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত বাসায় ফিরতে বাধ্য হয়েছেন।
উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক লায়লা আজিজ (৬০) বলেন, “আমার এক নিকটাত্মীয়কে ডাক্তার দেখানোর জন্য দুপুর ১২টায় অ্যাপয়েনমেন্ট ছিল। জ্যামের কারণে মিস হল।”
একই এলাকার ফারজানা চৌধুরী জানান, বুধবার উত্তরার শপিং কমপ্লেক্সগুলোয় সাপ্তাহিক ছুটি থাকার কারণে রাস্তাঘাটে মানুষ কম থাকে। তাই সাপ্তাহিক কাঁচাবাজারের কাজ তিনি বুধবারই সারেন।
“কিন্তু আজকে যে পরিস্থিতি…. আমাকে দুই হাতে দুই বাজারের ব্যাগ নিয়ে আড়াই কিলোমিটার পথ হেঁটে বাসায় ফিরতে হয়েছে।”
উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের বসবাস করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফজলুর রহমান।
বেলা আড়াইটার দিকে, দুই ঘণ্টা ধরে রাজলক্ষীর উল্টোদিকের সড়কে যানজটে আটকে রয়েছি।”
একই অভিজ্ঞতা হয়েছে উত্তরা ৫ নম্বরের নায়লা চৌধুরীরও।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নায়লা চৌধুরী দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বনানীতে তার অফিসের উদ্দেশে রওনা হন। কিন্তু যানজটের কারণে ৩ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর রোডে নিজের গাড়িতে প্রায় ঘণ্টাখানেক বসে থাকার পর বাসায় ফিরতে বাধ্য হন তিনি।
অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে বেড়াতে এসে উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের বোনের বাসায় থাকছেন শায়লা মোনায়েম। মেয়েকে নিয়ে বের হয়েছিলেন গুলশানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে; কিন্তু বাসার গেইটের সামনেই ৪০ মিনিট গাড়িতে বসে থাকতে হয় তাদের।
পরে বিকল্প পথে আশুলিয়া দিয়ে বেড়িবাঁধ হয়ে মিরপুর ও শ্যামলী পার হয়ে গুলশান পৌঁছান তারা।
ভারতীয় উপমহাদেশের সুন্নী মতাবলম্বী মুসলমানদের বৃহত্তম ধর্মীয় সংঘ তাবলিগ জামাতের মূল কেন্দ্র বা মারকাজ দিল্লিতে। কেন্দ্রীয় ওই পর্ষদকে বলা হয় নেজামউদ্দিন, যার ১৩ জন শুরা সদস্যের মাধ্যমেই উপমহাদেশে তাবলিগ জামাত পরিচালিত হয়।
এই পর্ষদের সদস্য মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভি সম্প্রতি নিজেকে তাবলিগের আমির দাবি করে বসেন। ফলে তার বাংলাদেশে আসা নিয়ে বাংলাদেশে তাবলিগের মূল দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়।
চলতি বছর ইজতেমায় যোগ দিতে ঢাকায় আসার কথা তার। এর জের ধরে সকাল থেকেই বিমানবন্দরের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করে তাবলিগ কর্মীরা।
বিক্ষোভের মধ্যেও দুপুরের দিকে দিল্লি থেকে মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভি ঢাকায় পৌঁছান। তবে বিকাল পর্যন্ত বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরে যেতে দেখা যায়নি।