×

মুক্তচিন্তা

দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক

Icon

কাগজ অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৭:১১ পিএম

কী করে অবাঞ্ছিত বিষয় সংবলিত বইগুলো ছাপা হলো এবং মাদ্রাসায় পাঠিয়ে দেয়া হলো তা খুঁজে বের করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি রোধে সব বিভাগ, সব স্তরের পাঠ্যপুস্তক উপযুক্ত ব্যক্তিদের দিয়ে প্রণয়ন করানো, পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও মুদ্রণ কার্যক্রম যথাযথ পরিমার্জন ও নজরদারির আওতায় আনা খুবই জরুরি।

আবারো মাদ্রাসার পাঠ্যবইয়ে অবাঞ্ছিত বিষয় সংযোজন। এবার অশ্লীলতা। ছাপা হয়ে যাওয়া বই বাতিল। সরকারের গচ্চা অন্তত ১৫ কোটি টাকা। গত মাসেই জঙ্গিবাদে উসকানি এবং নারী নেতৃত্ববিরোধী তথ্য সংবলিত মাদ্রাসার ৮টি পাঠ্যবই বাতিল করা হয়েছে। তাতেও গচ্চা গেছে বিপুল অর্থ। তাও ভালো যে বইগুলো শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানোর আগেই সেগুলো প্রত্যাহার করা সম্ভব হয়েছে। আমরা বুঝতে পারি না কীভাবে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারের দেয়া পাঠ্য পুস্তকে একের পর এক বিতর্কিত বিষয় সংযোজন করা সম্ভব হয়?

গতকালের ভোরের কাগজের একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছে, আগামী বছরের জন্য বিনামূল্যের পাঠ্যবই হিসেবে ছাপা হওয়া মাদ্রাসার দাখিল স্তরের সপ্তম, অষ্টম, নবম এবং দশম শ্রেণির চারটি পাঠ্যবইয়ে অশ্লীল, অযৌক্তিক, ইসলাম অবমাননাকর, মনগড়া বিষয় পাওয়া গেছে পর্যালোচনায়। অযৌক্তিক, ইসলাম অবমাননাকর, ব্যঙ্গাত্মক ও রসাত্মক মনগড়া উক্তি রয়েছে মাদ্রাসার সপ্তম, অষ্টম, নবম এবং দশম শ্রেণির চারটি পাঠ্যবইয়ের অন্তত ১০টি জায়গায়। চার শ্রেণির চার বিষয়ের ২৩ লাখ ৮৯ হাজার ৭৭৬ কপি পাঠ্যবই দেশের সব উপজেলায় পাঠানোও হয়েছিল। পরে সংশ্লিষ্টদের নজরে আসায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পাঠ্যবইগুলো দেশের সব জায়গা থেকে ফিরিয়ে এনে নতুন করে ছাপার কাজ শুরু করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এর আগে একই শিক্ষাবর্ষের মাদ্রাসার ৮টি পাঠ্যবইয়ে জঙ্গিবাদে উসকানি এবং নারী নেতৃত্ববিরোধী তথ্য খুঁজে পেয়েছিল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গবেষণা বিভাগ। এই বিষয়গুলো বাদ দিয়ে বই ছাপার কথা থাকলেও তা না করে বিতর্কিত বিষয় সংবলিত বই ছেপে পাঠানো হয়, পরে ওই ৮টি পাঠ্যবই বাতিল করা হয় ও নতুন ছাপার ব্যবস্থা নেয়া হয়। এ থেকে স্পষ্ট হয় কী মানের এবং চিন্তার লোকজন মাদ্রাসার পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে যুক্ত রয়েছেন। তাদের স্পর্ধা দেখে হতবাক হতে হয়। আবারো একই কাণ্ড। ছাপার আগে পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্মকর্তারা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কেউ জানেননি মাদ্রাসার পাঠ্য বইয়ে কী ছাপা হচ্ছে- এ ব্যাপারটিও বিস্ময়কর। এসব কর্মকর্তার দায়িত্বহীনতার জবাব কি?

আমরা চাই, কী করে অবাঞ্ছিত বিষয় সংবলিত বইগুলো ছাপা হলো এবং মাদ্রাসায় পাঠিয়ে দেয়া হলো তা খুঁজে বের করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও দেখভালে যারা থাকেন তাদের কঠোর জবাবদিহিতার আওতায় আনা হোক। এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি রোধে সব বিভাগ, সব স্তরের পাঠ্যপুস্তক উপযুক্ত ব্যক্তিদের দিয়ে প্রণয়ন করানো, পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও মুদ্রণ কার্যক্রম যথাযথ পরিমার্জন ও নজরদারির আওতায় আনা খুবই জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App