আসিয়ান সম্মেলনে থাকছে না রোহিঙ্গা ইস্যু
কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০১৭, ০৬:৪৬ পিএম
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সম্মেলন শেষে যে বিবৃতি দেওয়া হবে তাতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিষয়টি উল্লেখ করা হচ্ছে না। সোমবার বিবৃতির ঘোষণাপত্রের খসড়ার একটি অনুচ্ছেদ দেখার পর বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ওই অনুচ্ছেদে ভিয়েতনামে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মানবিক ত্রাণ পাঠানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ এবং ইসলামী জঙ্গিদের সঙ্গে ফিলিপাইনের সাম্প্রতিক লড়াইয়ের বিষয়টি উল্লেখ করা হচ্ছে। তবে রোহিঙ্গাদের বিষয়টি এড়িয়েই যাওয়া হচ্ছে। এতে স্রেফ রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের ‘ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়গুলো’ সম্পর্কে দুএকটি কথা বলা হয়েছে।
খসড়া বিবৃতিটি তৈরি করেছে ফিলিপাইন। এতে রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি এবং ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটিও ব্যবহার করা হয়নি। এই নামটি উচ্চারণ না করার জন্য বিদেশি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠের দেশ মিয়ানমার সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ‘অবৈধ অভিবাসী’ হিসেবে বিবেচনা করে এবং তাদের ‘রোহিঙ্গা’ পরিচয় স্বীকার করে না।
২৫ অগাস্ট থেকে রোহিঙ্গা নির্মূল অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। অভিযান শুরুর পর থেকে প্রাণ বাঁচাতে এ পর্যন্ত ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়ে আছে।
রোহিঙ্গাদের এই দুর্দশায় বিশ্বব্যাপী ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে খোদ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টেনিও গুতেরেস অভিযোগ করেন, রাখাইনে জাতিগত নির্মূল অভিযান চলছে।
আসিয়ানের সদস্য মালয়েশিয়া এর আগে রাখাইনের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। তবে কিন্তু আসিয়ানের ‘এক দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের হস্তক্ষেপ না করার’ নীতি মেনে সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুটি একপাশে সরিয়ে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ফিলিপাইনের প্রতিনিধি উইলনর পাপা বলেছেন, আসিয়ান নেতারা ‘সন্ত্রাসবাদ এবং শান্তি-শৃঙ্খলা নিয়ে কথা বলছেন। কিন্তু ঘরের ভেতরে যেখানে আস্ত একটি হাতি রয়েছে, সেখানে তারা ওই বিষয়ে কোনো কথা বলছেন না। এই লোকগুলি বিষয়টি এড়ানোর চেষ্টা করছে।’