×

জাতীয়

সিপিসি’র ৬৩তম সম্মেলন শুরু হচ্ছে কাল, চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত

Icon

এন রায় রাজা

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০১৭, ০৭:৩৭ পিএম

কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্সের (সিপিসি) ৬৩তম সম্মেলন শুরু হচ্ছে আগামীকাল বুধবার থেকে। চলবে ৮ই নভেম্বর পর্যন্ত। এতে অংশ নেবেন কমনওয়েলথভুক্ত ৫২টি দেশের ১৮০টি কেন্দ্রিয় ও প্রাদেশীক প্রদেশের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারসহ ৬ শতাধিক আইন প্রণেতা। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ও কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) যৌথভাবে এর আয়োজন করেছে। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হলো- ‘কনটিনিউনিং টু এনহ্যান্স দ্য হাই স্ট্যান্ডার্ড অব পারফরমেন্স অব পার্লামেন্টারিয়ানস্’। সম্মেলনে ৮টি কর্মশালা ছাড়াও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে। সম্মেলন কাল ১ নভেম্বর থেকে শুরু হলেও ৫ নভেম্বর সকালে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১৫০০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এর মধ্যে রয়েছেন দেশের বিশিষ্ট ও বিখ্যাত ব্যক্তি, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, বাংলাদেশে অবস্থিত আন্তজার্তিক বিভিন্ন সংগঠনের প্রধানরা। জানা গেছে, ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টায় এই সম্মেলনের উদ্বাধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃটেনের রানী এলিজাবেথ এ উপলক্ষে বাণী পাঠাবেন। আর সেই বাণী পাঠ করে শুনাবেন সিপিএ নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী । পদাধিকারবলে সিপিএ’র চিফ প্যান্ট্রন রানী এলিজাবেথ ও ভাইস প্যান্ট্রন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । ৫ নভেম্বর উদ্বোধনের পর থেকে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র। এর আগে রাজধানীর হোটেল রেডিশন ব্লুতে ২ নভেম্বর থেকে কয়েকটি সেশনের বৈঠক হবে। জানা যায়, শিরীন শারমিন চৌধুরী সিপিএ’র নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হওয়ার পরই বাংলাদেশে এর সম্মেলন অনুষ্ঠানের বিষয়টি সামনে আসে। গত বছরের ১ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সিপিএর ৬২তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গুলশানের হলি আর্টিজানে এবং শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সেইসব জঙ্গীহামলা কাটিয়ে এবছরই দেশে প্রথমবারের মত আইপিইউ এর সফল সম্মেলন হয়। সম্মেলনের আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে সিপিএ চেয়ারপার্সন বলেন, এখানে সিপিএভুক্ত দেশগুলোর পার্লামেন্টে গণতান্ত্রিক চর্চা বাড়ানো, নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো, নতুন ও যুবক সংসদ সদস্য বাড়ানো, নারী ক্ষমতায়ন, সদস্য দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা; যেমন- জলবায়ু অভিঘাতজনিত ক্ষতি ও প্রতিকার, জঙ্গিবাদ ও নিরাপত্তা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নাগরিক অধিকার, দুর্নীতি রোধে সংসদের ভূমিকা, সুপেয় পানি ব্যবস্থায় চ্যালেঞ্জ ও তার মোকাবেলা ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এছাড়া ৮টি ওয়ার্কশপও অনুষ্ঠিত হবে। এসকল আলোচনা ও কর্মশালায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও গৃহীত হবে। রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে আলোচনার সুযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. শিরীন শারমিন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের একটি প্রধান ও অন্যতম সমস্যা হলো মিয়ানমার থেকে অত্যাচারিত-নিপীড়িত হয়ে রোহিঙ্গাদের অবৈধ অনুপ্রবেশ। যা ইতোমধ্যে বৈশ্বিক সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে নিশ্চয়ই আলোচনা হবে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল কোন না কোন ভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করবেন। সম্মেলনের ষষ্ঠ দিনে ‘হোয়াট ফ্যাক্টরস ফুয়েল দি রাইজ অব ডিফারেন্ট কাইন্ডস অব ন্যাশনালিজম’-শীর্ষক কর্মশালায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে বলে ও তিনি উল্লেখ করেন। সম্মেলনে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, সম্মেলনে নিরাপত্তার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ নিয়ে আমি পুলিশের আইজি, র‌্যাবের ডিজি, ডিএমপি কমিশনার, ডিবি, আর্মড ফোর্সসহ সবগুলো গোয়েন্দা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। আমাদের প্রস্তুতিতে সদস্য দেশগুলোও আশ^স্ত হয়েছে। তিনি বলেন, কয়েক স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। বিমানবন্দর থেকে হোটেল পর্যন্ত, হোটেল থেকে সম্মেলনের ভেন্যু পর্যন্ত সব স্থানে আমরা নিরাপত্তা জোরদার করবো। এছাড়া সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করবে। সিপিএ সম্মেলনের বিশেষ আকর্ষণ সম্পর্কে জানতে চাইলে স্পিকার বলেন, সম্মেলনে অবশ্যই কিছু আকর্ষণ থাকবে। সম্মেলন উপলক্ষে একটি ডাক টিকিট প্রকাশ করা হবে। বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কুতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে। আইপিইউ সম্মেলনের মতো সম্মেলন স্থলে দেশের গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের (হস্তশিল্প) একটি মেলাও থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, বিদেশী প্রতিনিধিরা ওই মেলা থেকে দেশের বহু ভালো মানের পণ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন। কেননা, আমাদের পণ্য বহু দেশে রপ্তানি হয়। তারা সেখানে বসে বাংলাদেশের পণ্য কেনেন। এখন তারা অনেকেই এ দেশে আসছেন। অনেকেই বাংলাদেশের সুদৃশ্য ও মূল্যবান হস্তশিল্পের জিনিসপত্র কিনতে চাইবেন। মেলা থেকে পাট, তুলা, চট, চামড়া, মৃৎশিল্পসহ নানা ধরনের সুদৃশ্য ও মূল্যবাদ জিনিসপত্র বিদেশি অতিথিদের কেনার সুযোগ থাকবে। এছাড়া কিছু পণ্যের প্রদর্শনীও থাকবে। সম্মেলনের বিশেষ অর্জন বাংলাদেশের শক্তিশালী পার্লামেন্ট ও গণতন্ত্র, স্বাস্থ শিক্ষা, বিভিন্ন সেক্টরের উন্নয়ন সম্পর্কে বিদেশী বন্ধুদের জানান। আর সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করাটাও আমাদের জন্য গর্বের বিষয় বলে জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App